টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রূপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত সোমবার টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া এ দণ্ডাদেশ দেন। আদালতে পাঁচ আসামির উপস্থিতিতে বিচারক রায়ের সারসংক্ষেপ পড়ে শোনান। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিব মিয়া এবং সহকারী শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর আলম। গাড়ির সুপারভাইজার সফর আলী ওরফে গেণ্ডুকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছে, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে এ মামলায় ন্যায়বিচার হয়নি উল্লেখ করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হওয়ার ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে এ রায় ঘোষণা করা হলো। রায়ে আদালত ছোঁয়া পরিবহন নামের বাসটি ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহতের পরিবারকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার জন্য কালেক্টর টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ প্রদান করেছে আদালত। মধুপুরে চলন্ত বাসে রূপা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সারা দেশের জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। নারী বাসযাত্রীদের নানাভাবে হেনস্তা করা একশ্রেণির বাসচালক ও চালকের সহকারীদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। রূপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দৃষ্টান্তমূলক সাজা এ ধরনের অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। আদালতে ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে রায় প্রদানের ঘটনাও দৃষ্টান্তস্থানীয় বলে বিবেচিত হওয়ার দাবিদার। বিলম্বিত বিচার যখন বিচারব্যবস্থার মাহাত্ম্য ম্লান করে দিচ্ছে তখন রূপা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার দ্রুত বিচার শুধু স্বস্তিদায়কই নয়, প্রশংসার দাবিদার। আদালতকে এজন্য অভিনন্দন। আমরা আশা করব, প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে সময় ক্ষেপণের অকাম্য উদাহরণ এড়ানোর চেষ্টা করা হবে। বিলম্বিত বিচার যেহেতু বিচারহীনতার নামান্তর সেহেতু দেশের বিচারব্যবস্থার ওপর দেশবাসীর আস্থা সৃষ্টিতে দ্রুত বিচারের ক্ষেত্রে সব পক্ষ যত্নবান হবেন।