বুধবার, ১৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইসরায়েলি গণহত্যা

যুক্তরাষ্ট্র দায় এড়াতে পারে না

ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার গুলি, টিয়ার গ্যাস ও বোমা হামলায় অন্তত ৫২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। ৭০ বছর আগে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শক্তি বলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইসরায়েল নামের রাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের উত্খাত করে মধ্যপ্রাচ্যে বিষফোঁড়ার মতো অস্তিত্ব বজায় রেখেছে দেশটি। সেই দখলদারিত্ব বা ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী এবং তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে গাজায় ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। স্মর্তব্য, ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমে তাদের দূতাবাস স্থানান্তর করায় তা ফিলিস্তিনিদের মনে প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে। ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেমকে স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী করতে চায়। ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র নগর হিসেবে পরিচিত জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে তেলআবিব থেকে সেখানে দূতাবাস সরানোর মাধ্যমে। ইতিমধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি দূত ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গাজায় ভয়ঙ্কর গণহত্যার জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে ফিলিস্তিনের সহিংস ঘটনার জন্য হামাস দায়ী। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তর মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। ফিলিস্তিন ইসরায়েল বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির একমাত্র পথ ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকেও মেনে নেওয়া। জেরুজালেমকে দুই দেশের রাজধানীতে পরিণত করার প্রস্তাব বিবেচনায়ও ফিলিস্তিনিরা রাজি ছিল। সে পথকে উৎসাহিত না করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সরকার ইসরায়েলের চরমপন্থিদের উৎসাহিত করার যে নীতি গ্রহণ করেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। ফিলিস্তিনি গণহত্যার জন্য ইসরায়েল সরাসরি দায়ী হলেও যুক্তরাষ্ট্র তার দায় এড়াতে পারে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর