মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

হে আল্লাহ আমি যেন ভালো মুসলমান হই

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

হে আল্লাহ আমি যেন ভালো মুসলমান হই

মোনাফেক কথাটির সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি  পরিচিত। আরবি নাফকুন শব্দ থেকে মোনাফেক শব্দটি এসেছে। নাফকুন মানে গর্ত, ছিদ্র, সুড়ং, বের হওয়া, খরচ করা ইত্যাদি। ভাষাবিদরা মনে করেন, ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ শব্দ থেকে মোনাফেক শব্দটি এসেছে। নাফেকুল ইয়ারবু মানে পাহাড়ি ইঁদুর। ইঁদুর খুব চালাক ও ধূর্ত হয়। তারা যে গর্তে থাকে সেখানে দুটো প্রবেশপথ রাখে। এক মুখ দিয়ে তাকে ধরতে গেলে আরেক মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাদের ধরা সহজ নয়। মোনাফেকের স্বভাবও সে রকম। তাদের চরিত্র দুই ধরনের। তাদের ধূর্তামি ও চালাকি সহজে বুঝে ওঠা যায় না। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে এবং ইসলামী বিপ্লবের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি এ মোনাফেকরাই করেছে। তারা মুখে বলত, আমরা ইমান এনেছি; কিন্তু গোপনে গোপনে নবী ও ইসলামের ক্ষতির জন্য মরিয়া ছিল। আল কোরআনে আল্লাহ মোনাফেকের ব্যাপারে বিস্তারিত বলে নবী ও তাঁর উম্মতকে সাবধান করে দিয়েছেন। আজকের লেখায় কোরআনে আঁকা মোনাফেকদের ঘৃণিত চেহারাটি দেখে নেব ইনশা আল্লাহ।

মোনাফেকদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তারা লোক দেখানো ধর্মকর্ম করে। তারা মনে করে আল্লাহকে ধোঁকা দিচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ কী বলছেন তাদের সম্পর্কে? ‘নিশ্চয়ই মোনাফেকরা আল্লাহকে ধোঁকা দিতে চায়। আসলে তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতারিত করে। তারা যখন ধর্মকর্ম করে তখন মানুষকে দেখানোর জন্য করে। আসলে আল্লাহকে তারা খুব কমই স্মরণ করে।’ সূরা নিসা, আয়াত ১৪২। এর পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘বেচারারা! ওরা আসলে বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলছে। মোনাফেকির কারণে আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনো তাকে হেদায়াতের পথে আনতে পারবে না।’ সূরা নিসা, আয়াত ২৪৩। মোনাফেকরা একজন আরেকজনের বন্ধু। আল্লাহ বলেন, ‘মোনাফেক নারী-পুরুষ পরস্পর বন্ধু। তারা মন্দ কাজে প্ররোচিত করে আর সৎ কাজে বাধা দেয়। মানুষের কল্যাণে তারা ব্যয় করে না। তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে আল্লাহও তাদের ত্যাগ করেছেন। নিশ্চয়ই জেনে রাখো, মোনাফেকরা সত্য থেকে দূরে সরে গেছে।’ সূরা তওবাহ, আয়াত ৬৫-৬৬।

মোনাফেকরা মুমিনদের বিভ্রান্ত মনে করে। মোনাফেক ও বিকৃত মনের লোকেরা বলাবলি করে, ‘মুমিনদের ধর্মবিশ্বাসই তাদের বিভ্রান্ত করে রেখেছে। কিন্তু যারা আল্লাহর ওপর ভরসা করে তারা জানে, আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও প্রজ্ঞাময়।’ সুরা আনফাল, আয়াত ৪৯। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মোনাফেকি জীবন থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন। ইমানি জিন্দেগি যাপন করে জান্নাত-উপযোগী মানুষ হিসেবে জীবনযাপন করার তাওফিক দিন।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাস্সিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ মুফাস্সির সোসাইটি।

www.selimazadi.comy

 

 

 

সর্বশেষ খবর