বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ইসলাম শাহ

১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দে শেরশাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র ইসলাম শাহ দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করে বাংলাকে একটি একক প্রশাসনিক শৃঙ্খলার মধ্যে আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কিন্তু সোলায়মান খান ইসলাম শাহের ব্যবস্থা মেনে নিতে অস্বীকার করলে ইসলাম শাহ তাজ খান ও দরিয়া খান নামে দুজন সেনাপতিকে তার বিরুদ্ধে পাঠান। সোলায়মান খান তাদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পরাজিত ও নিহত হন এবং তার দুই পুত্র ঈসা ও ইসমাইলকে বন্দী করে ইরানি বণিকদের কাছে দাসরূপে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ১৫৬৩ খ্রিস্টাব্দে তাজ খান কররানি বাংলা ও বিহারের শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করলে ঈসা খানের চাচা কুতুব খান তার অনুগ্রভাজন হন এবং দরবারি কাজে নিযুক্তি লাভ করেন। এ সময় তিনি তার ভ্রাতুষ্পুত্রদ্বয়ের (ঈসা ও ইসমাইল) খোঁজ পেয়ে অর্থের বিনিময়ে ইরানি বণিকের কাছ থেকে তাদের মুক্ত করে আনেন। ঈসা খান দেশে ফিরে এসে চাচা কুতুব খানের প্রচেষ্টায় তার পিতার সরাইলস্থ জমিদারি লাভ করেন। ১৫৬৫ সালে তাজ খান কররানির মৃত্যুর পর ঈসা খান আফগান শাসকদের মোগল আক্রমণ মোকাবিলায় সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছিলেন। ১৫৭৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ত্রিপুরার রাজা উদয় মাণিক্যের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম অভিযানে দাউদ খানকে সাহায্য করেন। ১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি সোনারগাঁর পাশের এলাকা থেকে মোগল নৌবহরকে বিতাড়িত করতেও দাউদ খানের সেনাপতিকে সাহায্য করেন। ১৫৭৬ সালে রাজমহলের নিকটবর্তী আগমহলের যুদ্ধে দাউদ খান কররানি পরাজিত ও নিহত হলে কার্যত বাংলায় আফগান শাসনের অবসান হলেও ঈসা খান এ সময় প্রায় স্বাধীনভাবেই তার রাজ্য পরিচালনা করছিলেন। কিন্তু তিনি যথার্থভাবেই অনুধাবন করেন যে, তিনি নিজের সীমিত শক্তি দিয়ে একা মোগলদের মোকাবিলা করতে পারবেন না। তাই তিনি পাশের জমিদার ও আফগান দলপতিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাদের সঙ্গে মোগলবিরোধী রাজনৈতিক ও সামরিক মৈত্রী গঠন করেন।     জাফর খান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর