মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিশুর ক্ষীণদৃষ্টি সমস্যা

কম্পিউটার আসক্তি থেকে দূরে রাখতে হবে

ক্ষীণদৃষ্টিকে এক সময় ভাবা হতো প্রবীণদের সমস্যা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মক্ষমতাও হারায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। ফলে বয়স বাড়লে অন্তত চল্লিশের ওপর গেলে অনেকেই আক্রান্ত হয় ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যায়। কম বয়সীদের ক্ষেত্রে ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যা যে ছিল না এটি হলপ করে বলা যাবে না। তবে সে সংখ্যা ছিল নগণ্য এবং এর কারণ ছিল প্রধানত অপুষ্টি। কালের বিবর্তনে দেশে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা কমছে। কিন্তু ভয়াবহভাবে বাড়ছে ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যা। যে সমস্যার পিছনে অপুষ্টি নয় বরং দায়ী তথ্যপ্রযুক্তি আসক্তি। কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল ফোন, টেলিভিশনে আসক্তি শিশুর দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিচ্ছে এমন তথ্যই জানিয়েছেন চোখের চিকিৎসায় দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকেরা। তারা শিশুদের চোখে সমস্যার তিনটি কারণের কথা বলেছেন। এর মধ্যে কোনো কোনো শিশুর চোখে সমস্যা নিয়েই জন্মায়। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবজনিত কারণে শিশু রাতকানা রোগে ভুগতে পারে, এমনকি অন্ধও হয়ে যেতে পারে। আর তৃতীয়ত, স্ক্রিনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকার কারণে শিশুরা চশমা ছাড়া দূরের জিনিস দেখতে পায় না। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে মাসে গড়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিশু আসে। এদের ৭০ শতাংশ দূরের জিনিস ভালো দেখতে পায় না। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর তথ্যও অভিন্ন। ডাক্তারি ভাষায় রোগটিকে বলা হয় মাইয়োপিয়া বা ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যা। একই সঙ্গে এ রোগকে বলা হচ্ছে ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রম’। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী প্রতিদিন এক লাখ ৭৫ হাজার শিশু নতুনভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। কম্পিউটার, টিভি ও মোবাইল ফোন আমাদের যাপিত জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে জীবনের সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আমাদের শিশুরাও যুক্ত হচ্ছে কম্পিউটার, টিভি, মোবাইল ট্যাপের সঙ্গে। কিন্তু অতি আসক্তির কারণে তাদের এক বড় অংশ সর্বনাশের শিকারও হচ্ছে। শুধু দৃষ্টিশক্তির সমস্যা নয়, নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যারও শিকার হচ্ছে তারা। এ বিপজ্জনক ধারা থেকে শিশুদের রক্ষায় বাবা-মাদের সতর্ক হতে হবে। তাদের শিশু যাতে কম্পিউটার বা মোবাইল আসক্তি নামের সর্বনাশের দিকে পা না বাড়ায় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

সর্বশেষ খবর