মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

সম্পদের হিসাব করে জাকাত দেওয়া ফরজ

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

সম্পদের হিসাব করে জাকাত দেওয়া ফরজ

নামাজ-রোজার মতোই সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর বছরে একবার জাকাত দেওয়া ফরজ। নিজের ও নিজের পরিবার-পরিজনের সারা বছরের খোরপোষ ও ব্যয়ভার বহন করার পর যদি একজন মুসলমানের সাড়ে সাত তোলা সোনা বা তার মূল্য পরিমাণ টাকা, অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা তার মূল্য পরিমাণ অস্থাবর সম্পদ থাকে কিংবা দোকানের মাল, গচ্ছিত সম্পদ, যে কোনো প্রকারের ব্যাংক ডিপোজিট, এফডিআর, নগদ অর্থ অবশিষ্ট থাকে এবং তা এক বছর অতিবাহিত হয় তাহলে তার ৪০ ভাগের এক ভাগ (শতকরা আড়াই টাকা হারে) বছরে একবার গরিব মানুষকে দিয়ে দিতে হয়। এটাই জাকাত। এক লাখ টাকায় আড়াই হাজার টাকা জাকাত আসে। জাকাত আদায় করলে অবশিষ্ট সম্পদ পবিত্র হয়ে যায়। শারীরিক ইবাদতের পাশাপাশি আর্থিক ইবাদত পালন হয়। স্থাবর সম্পদে জাকাত নেই। তবে স্থাবর সম্পদের আয়ের ওপর জাকাত আছে। যেমন কারও বাড়ি বা জায়গাজমি আছে। এগুলোর ওপর জাকাত আসবে না। আসবে বাড়ি ভাড়া এবং জমি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর। পবিত্র কোরআনে যেখানেই নামাজের আলোচনা এসেছে সঙ্গে সঙ্গে জাকাতের আলোচনাও এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘নামাজ কায়েম কর ও জাকাত প্রদান কর। নিজেদের পরকালের জন্য তোমরা যা ভালো কাজ করে আগে পাঠিয়ে দেবে তা সবই আল্লাহর কাছে মজুত পাবে। যা কিছু কর সবই আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে।’ সূরা : আল বাকারাহ, আয়াত-১১০। কাকে জাকাত দেওয়া হবে-এ বিষয়ে এসেছে, ‘এ সদকা (জাকাত) তো আসলে ফকির ও মিসকিনদের জন্য। আর যারা সদকা (জাকাত) উসুল করার কাজে নিযুক্ত এবং যাদের মন জয় করা প্রয়োজন তাদের জন্য। তাছাড়া দাসমুক্ত করার, ঋণগ্রস্তদের সাহায্য করার, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিধান এবং আল্লাহ সবকিছু জানেন। তিনি বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ।’ সূরা : তাওবা, আয়াত-৬০। প্রিয় পাঠক! জাকাত যার ওপর ফরজ তার দায়িত্ব হচ্ছে জাকাত গ্রহীতাকে খুঁজে বের করা। এবং জাকাত তার হাতে পৌঁছে দেওয়া। গরিব, অভাবী, এতিম-অসহায় মানুষকে জাকাত দিতে হবে। তাছাড়া সমাজে এমন কিছু দীনদার লোক আছে যারা মান-সম্মানের ভয়ে কারও কাছে চাইতে পারে না, অথচ তারা অভাবী। জাকাত খাওয়ার উপযুক্ত। তাদেরও খুঁজে বের করে জাকাত দেওয়ার জন্য পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

 

 

সর্বশেষ খবর