সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

লাগামহীন কুরিয়ার সার্ভিস

শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ চাই

কুরিয়ার সার্ভিস এখন জনজীবনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডাক বিভাগের তুলনায় সেবার মান ভালো হওয়ায় সবাই ঝুঁকছেন কুরিয়ার সার্ভিসের দিকে। তবে পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদক, অস্ত্র এমনকি বিস্ফোরক দ্রব্য আদান প্রদান ঘটছে। গত ১৯ মে একটি বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসের উত্তরা অফিস থেকে এক লাখ ইয়াবার একটি প্যাকেট আটক করে র‌্যাব সদস্যরা। কক্সবাজার থেকে প্যাকেটটি পাঠানো হয়েছিল ঝিনুকের অলঙ্কারের নামে। বহুল আলোচিত হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত অত্যাধুনিক অস্ত্রগুলো সীমান্তবর্তী জেলা থেকে আমের ঝুড়িতে করে আনা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক কয়েক দফায় গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথাটি বলার পরও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। কোনো ধরনের স্ক্যানিং ছাড়াই চলছে কুরিয়ার সার্ভিসের পণ্য পরিবহন কার্যক্রম। পণ্য পরিবহনের বাইরেও বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের ঘটনা ঘটলেও ওই সব প্রতিষ্ঠানের ওপর কোনো নজরদারি নেই। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে। এ বিষয়ে ইন্টারপোল কয়েক দফা সতর্কবার্তাও পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দফতরে। অন্যদিকে শতাধিক লাইসেন্সবিহীন কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেশে-বিদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। তবে এ ধরনের ৫৩টি লাইসেন্সবিহীন কুরিয়ারের তালিকা তৈরি করে ডাক লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কুরিয়ার সার্ভিস যেহেতু দেশবাসীর জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে সেহেতু এসব প্রতিষ্ঠান যাতে বৈধ ভিত্তির ওপর গড়ে ওঠে সেদিকে যেমন নজর রাখতে হবে তেমন প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য আদান প্রদানে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিñিদ্র করতে হবে। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকদ্রব্য যাতে আদান প্রদান না হয়, সে ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে ৩০ বছর ধরে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো ব্যবসা পরিচালনা করলেও এ সংক্রান্ত কোনো যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করা হয়নি। ১২০ বছরের পুরান পোস্টাল আইন দিয়েই চলছে কুরিয়ার সার্ভিসের কার্যক্রম। যা যুগোপযোগী করা সময়েরই দাবি।

সর্বশেষ খবর