বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু

মশা মারার ওষুধে শুভঙ্করের ফাঁকি

ডেঙ্গু সারা দেশে এখন এক আতঙ্কের নাম। দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে বলে সহযোগী দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেঙ্গুর চার ধরনের সেরোটাইপ রয়েছে। সেগুলো হলো- ডিইএনভি-১, ডিইএনভি-২, ডিইএনভি-৩ ও ডিইএনভি-৪। আক্রান্তদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ডেঙ্গুর কোন সেরোটাইপে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে সে বিষয়ে গবেষণা করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগ। তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ৬ হাজার ১২৯ জনের মধ্যে ১ হাজার ২৭৮ জনের ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। আক্রান্তের মধ্যে নারী ও পুরুষ অনুপাত ১:২ দশমিক ৭। ৭৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে ৫ জনের ডিইএনভি-৪ পাওয়া গেছে। ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের মানুষ ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তের মধ্যে ২৬ শতাংশ এনএস১ পজিটিভ, ৬ শতাংশ আইজিএম পজিটিভ, ৫ শতাংশ আইজিএম ও আইজিজি পজিটিভ। ১০০ জন আইজিএম ও আইজিজি পজিটিভ রোগীর মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের ডেঙ্গু হেমোরিজিক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ বছর আক্রান্তের বেশির ভাগই আগে একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। কারও কারোর দু-তিন বার আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। একাধিকবার আক্রান্ত হলে মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে। ডেঙ্গু অত্যন্ত কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এ রোগে প্রাণহানির সংখ্যা এখনো সীমিত। সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশে কোনো রোগে ছয় মাসে ৪০-৫০ জনের মৃত্যুতে সাধারণভাবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নয়। কিন্তু ডেঙ্গুজ্বর রোগীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে ফেলে। ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক ১৫ হাজার হলেও এ রোগ দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের জন্য সাক্ষাৎ আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এডিস মশা ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য দায়ী। মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিলে ডেঙ্গু আতঙ্ক শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হতো। কিন্তু মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশনের গাফিলতি রাজধানীর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তুলেছে। রাজধানীর বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। সিটি করপোরেশন মশা নিধনে যে ওষুধ কেনে তাতে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। আমরা মনে করি, মশার ওষুধ সরবরাহকারীদের আইনের আওতায় আনতে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর