রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

চা উৎপাদনে রেকর্ড

চাষিরা যেন ন্যায্যমূল্য পায়

চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। বিদায়ী বছরে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ কোটি কেজি কিন্তু উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি কেজি। বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে চায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জিডিপিতে এর অবদান দশমিক ৮১ শতাংশ। দেশে চায়ের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে। সিলেটের মালনী ছড়ায় ১৮৫৪ সালে দেশের সর্বপ্রথম চা-বাগান গড়ে ওঠে। শুরু হয় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চায়ের চাষ। দেশের চা শিল্পের ১৬৫ বছরের ইতিহাসে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ কোটি কেজি উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছিল। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ চা বোর্ড উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৮ কোটি কেজি। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি কেজি, যা নতুন রেকর্ড। অনুকূল আবহাওয়া, পরিমিত বৃষ্টিপাত, অনাবাদি জমিতে চাষ, সঠিক সময়ে উৎপাদন কাজ শুরু, খরার কবলে না পড়া, সঠিক সময়ে কীটনাশক প্রয়োগ, পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়া প্রভৃতি কারণে চায়ের উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চায়ের উৎপাদন ১৪ কোটি কেজিতে উন্নীত করতে কাজ করছে। ‘২০১৮ সালের চেয়ে ২০১৯ সালে প্রায় দেড় কোটি কেজি চা বেশি উৎপন্ন হওয়ায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে চা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্বাধীনতার আগে চা ছিল দেশের অন্যতম রপ্তানিযোগ্য পণ্য। স্বাধীনতার পর চা উৎপাদন বাড়লেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানির সেই সুদিন এখন আর নেই। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কিছু পরিমাণ চা রপ্তানি হলেও পাশাপাশি কিছু চা আমদানিও হয়। সেদিক থেকে চা বাবদ অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আহামরি কিছু নয়। এক বছরের ব্যবধানে দেড় কোটি কেজি চা বেশি উৎপাদিত হওয়ায় রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। একসময় বৃহত্তর সিলেটেই শুধু চা উৎপাদন হতো। পরে পার্বত্য চট্টগ্রামে শুরু হয় চা চাষ। বর্তমানে দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও সংলগ্ন জেলাগুলোয় চা চাষ হয়। চা উৎপাদন বৃদ্ধি উৎপাদনকারীদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি সুখবর। তবে চা চাষিরা যাতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত না হন তা নিশ্চিত করতে  এখন থেকেই রপ্তানির বাজার খুঁজতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর