সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তর

এ সুমতি প্রশংসার দাবিদার

পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম সরানোর প্রতিশ্রুতি প্রহসনে পরিণত হয়েছিল বিকল্প স্থান ও স্থাপনার অভাবে। টঙ্গীর কাঁঠালদিয়ায় ছয় একর জমির ওপর অস্থায়ী গুদাম নির্মাণের তোড়জোড় আপাতত সে সমস্যা সমাধানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। শনিবার গুদামের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে সেখানে পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তর করা সম্ভব হবে। রাজধানীর পুরান ঢাকার কয়েক লাখ মানুষের জিম্মি অবস্থার অবসান ঘটবে। ৯১ কোটি ৭৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে টঙ্গীতে যে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে এলাকাটি অপেক্ষাকৃত কম ঘনবসতির। স্মর্তব্য, ২০১০ সালের ৩ জুন রাজধানীর নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১২৩ জন প্রাণ হারান। আহত হন কয়েকশ মানুষ। এ ঘটনার পর রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে নিতে আদেশ দেয় হাই কোর্ট। ওই আদেশ বাস্তবায়নের আগেই গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ফের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে। এ ঘটনায় ৬৭ জন নিহত হন। এরপর ৯ বছর আগে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ নিয়ে ফের বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়; যার পরিপ্রেক্ষিতে কেমিক্যাল গুদাম টঙ্গীতে স্থানান্তরের গরজ সৃষ্টি হয়। প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধনকালে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, রাজধানীর জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সাময়িকভাবে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য মুন্সীগঞ্জে বিসিক কেমিক্যাল শিল্পনগরী গড়ে তোলা হচ্ছে। এ শিল্পনগরী স্থাপনের পরপরই অস্থায়ী গুদাম থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবসায়ীদের স্থায়ীভাবে সরিয়ে মুন্সীগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে। পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তরের উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। ২০১০ সালের নিমতলী বিপর্যয়ের পর রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তর করা হলে গত বছর চুড়িহাট্টায় ৬৭ জনের প্রাণহানি এড়ানো যেত। হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও সময়মতো স্থানান্তরের পদক্ষেপ না নেওয়া দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আশা করব অস্থায়ী গুদামগুলোর নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। সম্ভাব্য কম সময়ের মধ্যে রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তর করে পুরান ঢাকাবাসীকে জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্ত করা হবে। প্রতিপালন করা হবে নয় বছর আগে দেওয়া হাই কোর্টের নির্দেশ।

সর্বশেষ খবর