ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের কিছু এলাকায় নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। কক্সবাজারে মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ১৭ হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুর। এক সপ্তাহে অন্তত ৫০ গজ ভূমিসহ ছয়টি ঘর বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শহররক্ষা বাঁধের অন্য পাশের বাসিন্দারা রয়েছেন চরম আতঙ্কে। টানা চার দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির তোড়ে ফসল, বীজতলা পানিতে তলিয়ে যায়। বাগেরহাটে শরণখোলা উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, উপজেলার ৯০ ভাগ মানুষ এখনো পানিবন্দী। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের মধ্যে থাকায় ও নদীতে পানির উচ্চতা বাড়ায় বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না ও জলাবদ্ধতা কমছে না। টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলাসহ পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বাড়ির আঙিনায় পানি থইথই করছে। ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে মানুষ। একাকার হয়ে গেছে মাছের ঘের ও পুকুর। তলিয়ে গেছে পুকুর ও আমন ধানের বীজতলা। তবে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চল থেকে বন্যার পানি দ্রুত নামছে। দু-তিন দিনের মধ্যে বেশির ভাগ এলাকা থেকে পানি নেমে যাবে। পানি নেমে যাওয়ার সময় উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের চার-পাঁচটি জেলায় নদীভাঙন বাড়তে পারে। এবারের বন্যা নদীশাসনের ত্রুটি উন্মোচন করে দিয়েছে। নদীবাহিত পলি জমেই বাংলাদেশের জন্ম। পলি জমির উর্বরতাও বাড়ায়। নদীগর্ভ উঁচু হওয়ায় নদী অতিরিক্ত পানি ধরে রাখতে পারছে না। পানির গমনপথ ভরাট করে স্থাপনা তৈরি হওয়ায় বন্যার পানি নেমে
যেতে সমস্যা হয়। প্লাবন সমভূমি থেকে পানি যাতে সহজে খাল-বিল-জলাশয় দিয়ে বিনা বাধায় নেমে যেতে পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে।
বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে।