মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

ইসলামে নারীর অসামান্য মর্যাদা

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

ইসলামে নারীর অসামান্য মর্যাদা

ইসলামে নারীর মর্যাদা অসামান্য। দুনিয়ার কোনো ধর্মে নারীকে এত মর্যাদা দেওয়া হয়নি, যা ইসলামে দেওয়া হয়েছে। মৌলিক অধিকারের দিক দিয়ে স্ত্রী ও স্বামী উভয়েই আল্লাহর কাছে সমান। কেউ কম নয়, কেউ বেশিও নয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘স্ত্রীদেরও তেমনই অধিকার রয়েছে যেমন স্বামীদের রয়েছে তাদের ওপর এবং তা যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।’ সুরা আল বাকারাহ, আয়াত ২২৮। জাহেলি যুগে স্ত্রীদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হতো। কোনো কোনো স্বামী স্ত্রীদের পূর্ণ অধিকার আদায় করত না, আবার তালাক দিয়ে মুক্ত করে অন্য স্বামী গ্রহণেরও সুযোগ দিত না। বরং এভাবে আটকে রেখে তাদের কাছ থেকে নিজেদের দেওয়া ধন-সম্পদ ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাত। কোরআন মজিদ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে- ‘তোমরা (হে স্বামীরা) তাদের (স্ত্রীদের) বেঁধে আটকে রাখবে না এ উদ্দেশ্যে যে তাদের কাছ থেকে তোমাদের দেওয়া ধনসম্পদের কিছু অংশ কেড়ে নেবে।’ সুরা আন নিসা, আয়াত ১৯। জাহেলি যুগে স্ত্রীদের ঘরের অন্যান্য সম্পদের মতোই অস্থাবর সম্পত্তি মনে করা হতো এবং স্বামী মারা গেলে তার স্ত্রীকেও পরিত্যক্ত সম্পদের মতো বণ্টন করে দেওয়া হতো। ইসলাম তা বন্ধ করেছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদার লোকেরা! তোমরা মেয়েদের অন্যায়-জবরদস্তি করে নিজেদের মিরাসের সম্পদ বানিয়ে নিও না, তা তোমাদের পক্ষে আদৌ হালাল হবে না।’ সুরা আন নিসা, আয়াত ১৯। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে বলেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে অবশ্যই ভয় করে চলবে। তোমাদের মনে রাখতে হবে যে তোমরা তাদের আল্লাহর নামে গ্রহণ করেছ এবং এভাবেই তাদের হালাল মনে করেই তোমরা তাদের উপভোগ করেছ।’ মুসলিম। এ পর্যায়ে ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, জাহেলি যুগে আমরা স্ত্রীদের কিছুই মনে করতাম না, পরে যখন আল্লাহ তাদের মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে অকাট্য বিধান নাজিল করলেন এবং তাদের মিরাস নির্দিষ্ট করে দিলেন তখন আমাদের মনোভাব ও আচরণের আমূল পরিবর্তন সাধিত হলো।’ মুসলিম। স্ত্রীদের অধিকারের ব্যাখ্যা দিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তুমি যখন আহার কর, তাকেও আহার করাও, তুমি যখন পরিধান কর, তাকেও পরিধান করাও, কখনো মুখমন্ডলে প্রহার কোর না, কখনো অশ্লীল ভাষায় গালি দিও না এবং ঘরের মধ্যে ছাড়া তার থেকে বিচ্ছিন্ন হইও না।’ আবু দাউদ। অন্য হাদিসে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেসব লোক উত্তম যারা তাদের স্ত্রীদের জন্য ভালো।’ তিরমিজি। তিনি বলেন, ‘সমগ্র পৃথিবীটাই সম্পদ। আর পৃথিবীর সর্বোত্তম সম্পদ হলো সৎকর্মপরায়ণ স্ত্রী।’ মুসলিম। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে স্ত্রীদের মর্যাদা ও অধিকার প্রদানের তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর