মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ইমারত বিধিমালা

বাস্তবসম্মত করার উদ্যোগ নিন

বাসস্থান মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। দেশের স্বাধিকার আন্দোলনে অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের দাবিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোনো নাগরিক যাতে গৃহহীন না থাকে সে প্রত্যাশা পূরণে আজীবন কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার ঘোষিত কর্মসূচিতেও এ বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। সন্দেহ নেই এ উদ্দেশ্য সামনে রেখেই প্রণীত হয়েছে প্রস্তাবিত ড্যাপ (২০১৬-২০৩৫) ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ২০২১-এর খসড়া। কিন্তু এ দুই ক্ষেত্রে শিব গড়তে গিয়ে বানর গড়ার ভ্রান্তি যাতে না হয় তা নিশ্চিতকরণের দাবি উঠেছে। ড্যাপ ও ইমারত বিধিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে তা নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী ও স্টেকহোল্ডারদের বাস্তবসম্মত মতামতের ভিত্তিতে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব। সংগঠনটির আশঙ্কা, সংশোধন ছাড়া প্রস্তাবিত ড্যাপ ও নির্মাণ বিধিমালা অনুমোদন হলে ফ্ল্যাটের মূল্য ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে, যা সাধারণ মানুষের আবাসন সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করবে। আবাসন খাত ও এর সঙ্গে জড়িত ২৬৯টি উপখাত ধ্বংসের মুখে পড়বে। ঝুঁকিতে পড়বে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৪০ লাখ শ্রমিক ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের রুটি-রুজি। ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ২০০৮ অনুযায়ী ২০ ফুট রাস্তার পাশে ৫ কাঠা জমিতে ১৩ হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তনের গ্রাউন্ড ফ্লোরসহ আট তলা ভবনের অনুমতি পাওয়া যেত। প্রস্তাবিত বিধিমালায় পাঁচ তলা ফ্লোরবিশিষ্ট ৯ হাজার বর্গফুটের ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যাবে। রাস্তা ২০ ফুটের কম হলে ভবনের উচ্চতা তিন-চার তলার বেশি হবে না। প্রস্তাবিত ড্যাপ ও খসড়া ইমারত বিধিমালার পক্ষে অনেক যুক্তি থাকলেও দেশে ভবন নির্মাণের ভূমির অপ্রতুলতার বিষয়টি মনে রাখা হয়নি। প্রস্তাবিত ড্যাপ ও ইমারত বিধিমালার বাস্তবতাবিবর্জিত বিধানগুলো সংশোধন না হলে আবাসন চাহিদা পূরণে সংকট সৃষ্টি হবে। অর্থনীতির জন্যও তা বিড়ম্বনা ডেকে আনবে; যা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর