শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সরকারি হাসপাতাল

যথেচ্ছতার অবসান হওয়া উচিত

অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো চিকিৎসাও একটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের স্বাধিকার সংগ্রামে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ছিল অন্যতম ইস্যু। মুক্তিযুদ্ধে যে স্বাধীন স্বদেশের স্বপ্নকল্প সামনে রেখে মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করেছেন, সেখানেও চিকিৎসাসহ সব মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় কাজ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করে। লাখ লাখ মানুষ হত্যা শুধু নয়, পুরো দেশকেই প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। সে অবস্থায়ও আমাদের সংবিধানপ্রণেতারা স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। গত ৫০ বছর যখন যে সরকার এসেছে সবাই স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে কমবেশি অবদান রেখেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাস্তবায়ন পর্যায়ে নানা ত্রুটি ও দুর্নীতির কারণে এর সুফল দেশবাসী কতটা পেয়েছে তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। দেশের অন্যতম সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারিভাবে ২২০ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও ইনজেকশনও আছে। যেগুলো রোগী বিনামূল্যে পেতে পারে। কিন্তু রোগীদের সেসব ওষুধ না দিয়ে বাইরে থেকে কিনে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ হাজার রোগী আসে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক রোগীর জন্য রয়েছেন মাত্র আট থেকে ১০ জন চিকিৎসক। ফলে রোগীপ্রতি দেড় থেকে দুই মিনিট সময় পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এ স্বল্পসময়ের মধ্যেই রোগীর সঙ্গে কথা বলে তার বক্তব্য শুনে তারা ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। প্রতিদিন একজন চিকিৎসক ৫০০-এর বেশি রোগী দেখছেন। স্বাধীনতার পর হাসপাতালের সক্ষমতা ১ হাজার ৫০ বেড থেকে দুই ধাপে বাড়িয়ে ২ হাজার ৬০০ বেডে উন্নীত করা হলেও সে তুলনায় জনবল বাড়েনি। অন্য সরকারি হাসপাতালের সেবা আরও নিম্নমানের। রোগীদের প্যাথলজির টেস্ট সরকারি হাসপাতালে করা হয় না বললেই চলে। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং তাদের ইউনিয়নের কাছে জিম্মি দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। হাসপাতালের ওষুধ বাইরে বিক্রি এবং রোগীদের জিম্মি করে অর্থ আদায় নিত্যকার ঘটনা। এ যথেচ্ছতার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর