সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

হাওরের বাঁধ

কৃষকদের হাতে দায়িত্ব দিন

বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকায় একাধিকবার ধান চাষ হলেও হাওর এলাকায় মাত্র একবার কৃষকের গোলায় ধান ওঠে। এ ধানই হাওর এলাকার সিংহভাগ মানুষের একমাত্র জীবিকা। হাওরের ধান শুধু ওই এলাকার মানুষের পেটের ভাত জোগায় না, দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এ বাস্তবতাকে কেউ অস্বীকার না করলেও হাওরের ধান ‘আমলাতান্ত্রিকতার’ ছোবলে প্রায়ই মার খাচ্ছে। হাওর এলাকায় আগাম বন্যা এলেই নষ্ট হয়ে যায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রমের ফসল। বন্যা রোধের জন্য নির্মিত বাঁধে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকায় শুধু ওই এলাকা নয়- সারা দেশকেই খাদ্যাভাবের দিকে ঠেলে দেয়। এ বছরও আগাম বন্যায় ভেসে গেছে হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক উপদ্রূত এলাকা সফরকালে বলেছেন, হাওরে বড় ক্ষতি হলে দেশের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। সারা বিশ্বে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা আছে। এ দুটি দেশ সারা বিশ্বের বৃহৎ গম উৎপাদক ও রপ্তানিকারক। হাওরের ফসল যদি আরও কিংবা পুরোটা নষ্ট হয় তখন চালের দাম বেড়ে যাবে। আগাম বন্যার কারণে ধানের দাম বাড়লে আমাদের কাছে আর জবাব থাকে না। তারপরও সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকতে। হাওর এলাকার বাঁধগুলো অনেক ক্ষেত্রে সময়মতো সংস্কার হয় না। এ ক্ষেত্রে বাঁধ সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে বিদ্যমান নীতিমালা প্রয়োজনে পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। আগাম বন্যার ক্ষতি রোধ করা না গেলেও বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার সম্পর্কে মন্ত্রীর বক্তব্য হতাশার মধ্যেও আলো জাগিয়েছে। আমরা এ কলামে বারবার দৃষ্টিপাত করেছি হাওরের বাঁধ নির্মাণে ‘এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই’ পদ্ধতির অবসান ঘটাতে হবে। বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে কৃষকদের যুক্ত করলে তাদের স্বার্থেই গড়ে উঠবে টেকসই বাঁধ। ফসল রক্ষা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে। নিশ্চিত হবে হাওরবাসীর পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর