মাদক তৈরির এক কারিগরকে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্স র্যাব। যেনতেন প্রকারের মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক তৈরির কারিগর নন তিনি। একাধারে উচ্চশিক্ষিত অন্যদিকে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা নিয়ে তিনি দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে পৈতৃক টেক্সটাইল ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব পান। তবে শিল্পপতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের চেয়ে ‘বিজ্ঞানী’ হওয়ার ব্যাপারে তিনি আগ্রহী হয়ে পড়েন। তা-ও আবার যে সে নয়, মাদকবিজ্ঞানী। দেশে এসে টেক্সটাইল ব্যবসা দেখার পাশাপাশি শুরু করেন মাদক নিয়ে গবেষণা। বিভিন্ন দেশ থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ‘কুশ’, ‘হেম্প’, ‘মলি’, ‘ফেনটানল’-এর মতো মাদকের চালান দেশে এনে বাজারজাত করেন সফলভাবে। পরে ভয়ংকর ওই সব মাদক দেশে উৎপাদন ও বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টও তৈরি করেন। নিজের উদ্যোগেই অতি গোপনে শুরু করেছিলেন মাদকের চাষ। তবে শেষরক্ষা হয়নি ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদের (৩৮)। দেশে প্রথমবারের মতো কুশ মাদকের চালান উদ্ধার এবং এ মাদক তৈরির হোতা সাঈদকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছে র্যাব। সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেছেন, সোমবার গুলশান থেকে ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক এবং ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ডলার উদ্ধার করা হয়। পরে সাঈদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাদক চাষের সেটআপ আবিষ্কারে সক্ষম হন র্যাব সদস্যরা। র্যাব সদস্যদের ধারণা, পড়াশোনার জন্য বিদেশে গিয়ে মাদক কারবারি চক্রের সঙ্গে যুক্ত হন সাঈদ। অবিশ্বাস্য লাভজনক বিভিন্ন মাদক উৎপাদনের পদ্ধতিও তিনি আয়ত্তে আনেন। ২০১৯ সাল থেকে সাঈদ দেশে বেশ নিরাপদেই চালাচ্ছিলেন মাদক ব্যবসা। আত্মীয়স্বজনের নামে বিদেশ থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আমদানি করতেন মাদক। আত্মীয়স্বজনরা জানতেন না তাদের ব্যবহার করে কত বড় অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। কিন্তু র্যাব গোয়েন্দাদের কারণে সাঈদের শেষরক্ষা হয়নি। আমরা আশা করব এ চক্রের সব সদস্যকে আইনের আওতায় আনা হবে।