শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

খাদ্য উৎপাদন

অস্তিত্বের স্বার্থেই বাড়াতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ যাতে কখনো দুর্ভিক্ষ বা খাদ্য সংকটে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে এখন থেকেই উদ্যোগ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা শুধু সময়োপযোগীই নয়, সবার জন্য অনুকরণীয়। করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বের সব দেশের অর্থনীতি। সেই ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। একই সময়ে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আঘাত হেনেছে জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রভাব। যে অপপ্রভাবের কারণে চলতি বছর বাংলাদেশকে কোটি কোটি মণ খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে। এ খাতের বিপুল ব্যয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ধকল সৃষ্টি করেছে। আইএমএফসহ বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষ সংগঠনগুলো আগামী বছর বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি দুর্ভিক্ষেরও আশঙ্কা করেছে। প্রধানমন্ত্রী যৌক্তিক কারণেই বলেছেন, খাদ্যের চাহিদা কখনো কমবে না, বরং বাড়বে। আগামীতে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেক দেশই খাদ্য সংকটে পড়বে। আমাদের যাতে সে রকম পরিস্থিতি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। হয়তো অনেক দেশে আমাদেরই খাদ্যসহায়তা পাঠাতে হবে। সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে হবে। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল আমরা কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হব। কিন্তু আমাদের আগে যত সরকার ছিল তাদের সবার ভাবনা ছিল এটা না করে কিছু লোককে দিয়ে ব্যবসা করাবে, আমদানি করবে, সাহায্য নেবে। ১৯৯৬-এ ক্ষমতায় এসে আমরা টার্গেট নিলাম খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। ১৯৯৮ সালে বন্যা হয় দেশে। তখন বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বলেছিল ২ কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। আমরা বলেছিলাম একজনও মারা যাবে না। ৬৯ দিন ছিল বন্যা। যেসব এলাকায় বন্যা ছিল না সবখানে ধানের চারা রোপণ করা হয়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই এয়ারফোর্সের মাধ্যমে সবখানে বীজ পৌঁছে দেওয়া হয়। সে বছরই প্রথম বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।

প্রধানমন্ত্রীর উপরোক্ত বক্তব্যের আলোকে দুনিয়াজুড়ে খাদ্য সংকটের সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে এখন থেকেই আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে অস্তিত্বের কথা মনে রেখে। তবে কৃষকও যাতে খাদ্যপণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় তা নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর