বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সংঘাতপ্রবণ জনগোষ্ঠী হিসেবে নিজেদের পরিচিতি পাকাপোক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় গত পাঁচ বছরে আধিপত্য বিস্তার এবং মাদক ব্যবসার কারণে খুন হয়েছেন অন্তত ১২৫ জন। ক্যাম্পগুলোকে যমপুরী হিসেবে অভিহিত করেন বোদ্ধাজনেরা। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের থাকা-খাওয়ার কোনো দুশ্চিন্তা নেই। মাদক, অস্ত্র ও নারী ব্যবসা করে এদের অনেকে বিপুল সম্পদের মালিক বনেছেন। কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কমপক্ষে ১২৫টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। গত এক সপ্তাহেই খুন হয়েছেন ছয়জন। প্রায় প্রতিদিনই কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের ৩২ ক্যাম্পের কোথাও না কোথাও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন বাসিন্দারা। এর জেরে খুনের ঘটনাও ঘটছে। এ সংঘাতের নেপথ্যে রয়েছে প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব, আর্থিক লেনদেন, প্রতিবেশী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার উসকানি। পাশাপাশি চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, মানব পাচার, অস্ত্র ব্যবসা ও জঙ্গি সংগঠনের কর্তৃত্ব নিয়ে টার্গেট কিলিং ঘটছে। রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা ছিল। ক্যাম্পগুলোয় প্রতি বছর ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করছে। পাঁচ বছর পর রোহিঙ্গার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ লাখের বেশি। রোহিঙ্গারা শুধু নিজেদের মধ্যেই সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে না, সশস্ত্র অপরাধীরা বাংলাদেশি নাগরিকদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য তারা যেমন হুমকি হয়ে উঠেছে, তেমনি প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে কক্সবাজারসহ সংলগ্ন এলাকায় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার আশ্রয় নেওয়ার কারণে। বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র্যও ধ্বংস হয়ে পড়ছে গাছপালা বিলীন হওয়ায়। এ আপদমুক্তির একমাত্র পথ যে-কোনো উপায়ে রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশে অথবা অন্য কোথাও ফেরত পাঠানো।