বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

জাহাজভাঙা শিল্প

সংকট মোচনের পদক্ষেপ নিন

দেশের জাহাজভাঙা শিল্প ত্রিশঙ্কু সংকটের মুখে পড়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, ডলার সংকট, পুরনো জাহাজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জাহাজভাঙা শিল্প। ফলে অপার সম্ভাবনাময় এ শিল্প শুধু নয়, ইস্পাত শিল্পসহ অন্য খাতেও সংকট তৈরি হচ্ছে। বিশ্বে প্রতি বছর অন্তত ৮০০ জাহাজ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে বর্জ্যে পরিণত হয়। সেগুলো রিসাইক্লিং করার যে প্রক্রিয়া সেটাই জাহাজভাঙা শিল্প। ২০১৫ সালের পর থেকে এ শিল্পে ব্যাপক অগ্রগতি হয় বাংলাদেশে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্বে যত জাহাজভাঙা হয় তার ৪৭.২ শতাংশ জাহাজ সীতাকুন্ডের সমুদ্র উপকূলে ভাঙা হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে এ শিল্প নানামুখী সংকটে পড়ে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও এ খাতে ধাক্কা দেয়। সাম্প্রতিক ডলার সংকটের কারণে সরকার কম প্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খোলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করায় পুরনো জাহাজ আমদানি কমে যায়। জাহাজ মালিকরা পুরনো জাহাজ সংস্কার করে বেশি সময় ব্যবহারের চেষ্টা করছেন। ফলে আগের চেয়ে এখন অনেক কম জাহাজ স্ক্যাপে পরিণত হচ্ছে। জাহাজভাঙা শিল্পের কাঁচামালে সংকট দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশের জন্য বাড়তি সংকট সৃষ্টি করছে। দেশের ইস্পাত শিল্প কাঁচামালের জন্য অনেকাংশেই পুরনো জাহাজের ওপর নির্ভরশীল। পরিত্যক্ত জাহাজ আমদানি কমে যাওয়ায় ইস্পাত শিল্পের কাঁচামালের ক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে সংকট। রডের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের নির্মাণ শিল্পে তার অপপ্রভাব অনুভূত হচ্ছে। ভবন নির্মাণের ব্যয় বেড়ে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। সংকট আরও ঘোরতর করছে ব্যাংকগুলো পুরনো জাহাজ আমদানিতে এলসি খুলতে গড়িমসি করায়। পুরনো জাহাজ যেহেতু ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেহেতু এটিকে কম প্রয়োজনীয় পণ্য ভাবার অবকাশ নেই। লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা যেহেতু জাহাজভাঙা শিল্প ও নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত, সেহেতু সংকট মোচনে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর