রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তপনা

ঘাড় থেকে বোঝা নামানোর উদ্যোগ নিন

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল মানবিক কারণে। এ ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছিল সরকার। দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য শুরু করে প্রচারণা। পাশাপাশি জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলো চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের ওপর। বিপন্ন মানুষের প্রতি বাংলাদেশের নৈতিক দায়ও সে সময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। কারণ একাত্তরে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর গণহত্যার মুখে এ দেশের ১ কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। সেনা অভিযানের মুখে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে বিপাকে পড়েছে, তা থেকে কবে রেহাই মিলবে নিশ্চয়তা নেই। কক্সবাজারের ৩২ রোহিঙ্গা শিবির যেন অপরাধীদের কারখানা। এসব শিবিরে গত পাঁচ বছরে ১৩৫ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। মামলা হয়েছে ৫ হাজার ২২৯টি। রোহিঙ্গা নামের দুর্বৃত্ত প্রজাতির কারণে হুমকিতে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা। বিশ্বের বৃহত্তম এই শরণার্থী শিবিরে সংঘাত, ডাকাতি, ধর্ষণ, অপহরণ, খুন যেন স্বাভাবিক চিত্র। রোহিঙ্গারা নিজেরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য এবং স্থানীয়দের ওপরও হামলা চালানোকে রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে বেছে নিয়েছে। মানবিকতার অনন্য নজির স্থাপন করে বাংলাদেশে স্থান দেওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরগুলো পরিণত হয়েছে বিষফোঁড়ায়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে ২০১৭ সালে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটা অংশ ২০১৮ সালের শুরু থেকেই অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। এর পর থেকে গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। মাদক, অস্ত্র, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণ, আধিপত্য বিস্তার, অপহরণ, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, মানব পাচারসহ সব ধরনের অপরাধে হাত পাকাচ্ছে তারা। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বোঝা নামাতে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যাতে উদ্যোগী হয় সে ব্যাপারে সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর