বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফল আমদানি

নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিন

ফল আমদানির আড়ালে বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে- এমন অভিযোগ দানা বেঁধে উঠেছে খোদ দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যেও। তাদের অভিযোগ, একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী এ অপকর্মে জড়িত। একই সংশয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের মধ্যেও জেঁকে বসেছে। ডলার সংকটে গত বছর সর্বক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতার নীতি অনুসৃত হওয়ার মধ্যেও বাংলাদেশে ৫ হাজার ১৭ কোটি টাকার ফল আমদানি হয়েছে। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশের এক-চতুর্থাংশ অর্থাৎ ৪ কোটি মানুষ সারা বছর কোনো বিদেশি ফল খান না বলে ধারণা করা যেতে পারে। বাকি ১২ কোটির মধ্যে নিয়মিত বিদেশি ফল খান এমন মানুষের সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি নয়। এ হিসাবে কোনোভাবেই ফল আমদানি বাবদ এক-দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। অথচ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে যখন কৃচ্ছ্রতার নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে তখন গত বছর ৫ হাজার ১৭ কোটি টাকার ফল আমদানি হয়েছে। যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৯৭ শতাংশ বেশি। এনবিআর সংশ্লিষ্টদের মতে, ফল আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে অর্থ পাচার হচ্ছে। ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। এ পরিস্থিতিতে ফল আমদানি বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ী আর অর্থনীতিবিদরা। এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে ফল আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকার। ২০২২ সালে এ খাতে প্রায় দ্বিগুণ ব্যয় গ্রহণযোগ্য নয়। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতির অভিমত, বাংলাদেশে বিদেশি ফল আমদানির দরকার নেই। এফবিসিসিআই ফল আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কারণ, আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বিপুল পরিমাণে ফল আসছে। দেশীয় ফল দিয়েই আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করতে হবে। ফল আমদানির আড়ালে বিদেশে অর্থ পাচারের যে অভিযোগ উঠেছে সে ব্যাপারে সরকার তদন্ত করে দেখবে- এমনটিই প্রত্যাশিত। আমদানি নিরুৎসাহিত করার জন্যও নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর