সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রাথমিকে এক শিফট

নির্দেশনাটি বাস্তবসম্মত নয়

দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিফট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। এ বিষয়ে তাদের জারিকৃত নির্দেশনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারির আগে সংশ্লিষ্ট অধিদফতর বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়নি- এমন অভিযোগ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের। সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিফট চালু করতে হলে আরও শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন হবে। বাড়াতে হবে ক্লাসরুমের সংখ্যা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক এবং ক্লাসরুমের সংখ্যা না বাড়িয়ে বাস্তবতা বর্জিত নির্দেশনা জারি ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার শামিল। স্বভাবতই প্রাথমিক শিক্ষকরা পড়েছেন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায়। একই আদেশে শিক্ষার্থী কম থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবসম্মত নয়। শিক্ষক এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের অভিমত, কোমলমতি শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিকের খুদে শিক্ষার্থীরাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের পক্ষে ১ কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে গিয়ে ক্লাস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। ছাত্রীদের পক্ষে এত দূরে ক্লাস করাও সমভাবে কঠিন। কারণ সামাজিক নিরাপত্তার অভাব গ্রাম-শহর সর্বত্রই প্রকট। এমন সিদ্ধান্ত না পাল্টালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। দেশের হাওর-বাঁওড়, চর এবং পার্বত্য এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বাস্তবতা বর্জিত নির্দেশ বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। বর্তমানে সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোতে ১ কোটি ৪২ লাখ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। শিক্ষক সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ। সাড়ে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০ ভাগই ডাবল শিফটের। এক শিফটের স্কুলগুলোতে সকাল ৯টায় পাঠদান শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় শেষ হয়। দুই শিফটের স্কুলে সকাল ৯টা থেকে ১২টা এবং ১২টা থেকে সোয়া ৪টা পর্যন্ত চলে। আমাদের বিশ্বাস কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবে। এ ক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতার অবসান ঘটিয়ে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর