মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কর্মসংস্থানে খরা

মন্দা মোকাবিলায় সচেতন হতে হবে

দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ হ্রাস পাচ্ছে। গত ১৪ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির এই দেশে কর্মসংস্থানের হার ছিল বেশ সন্তোষজনক। বেকারত্বের হার ছিল উচ্চশিক্ষিতের মধ্যেই বেশি। দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে সরকারি ও বেসরকারি খাতে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় কর্মমুখী শিক্ষার বদলে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট দেওয়াকে তাদের কর্তব্য বলে ভাবায় শিক্ষিত বেকাররের সংখ্যা বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। করোনা ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে যে মন্দাবস্থা চলছে তাতে অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশও পড়েছে বিপাকে। শিল্পকারখানা স্থাপনের কাজ থমকে গেছে। যেসব শিল্প চালু ছিল তার একাংশ জ্বালানি ও ডলার সংকটে ধুঁকে ধুঁকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। প্রাতিষ্ঠানিক বা অপ্রাতিষ্ঠানিক সব ধরনের কাজের বাজারে বিরাজ করছে মন্দা। ব্যাংক, বীমা, করপোরেট, এনজিওসহ বেসরকারি খাত ও সরকারি খাত কোথাও কাজের সুখবর নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, আতঙ্ক ও অস্থিরতা বাড়ার আশঙ্কায় প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করছে না সরকার। কর্মমুখী শিক্ষার অভাবে দেশে দক্ষ লোকের সংকট আছে এটা যেমন ঠিক, তেমন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বহু লোক কাজ পাচ্ছে না; সেটাও সঠিক। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট যেমন শিল্প খাতের টানাপোড়েনের সৃষ্টি করেছে, তেমন ডলার সংকটের প্রভাবে কাজের সুযোগ কমেছে। কেননা নতুন করে বিনিয়োগের আগে উদ্যোক্তারা বারবার ভাবছেন। নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারছেন না। আবার বৈশ্বিক সংকট তো এক ধরনের অনিশ্চয়তাও তৈরি করেছে শিল্পসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক খাতে। ফলে বেকারত্ব বাড়ছে। অবশ্য বিশ্বজুড়ে একই চিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে বলে মনে করে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। কর্মসংস্থানের প্রধান খাত দেশের পোশাক শিল্পে নতুন কোনো বিনিয়োগ নেই। নতুন কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। নির্মাণ শিল্পেও চলছে গভীর সংকট। সিমেন্ট ও রডের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভবন নির্মাণের কাজ মুখ থুবড়ে পড়ছে। এবার গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সংকট বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতে যে সংকট চলছে তা বৈশ্বিক মন্দার অনুষঙ্গ। এর মোকাবিলায় সব মানুষকেই সচেতন হতে হবে। বন্ধ করতে হবে সব ধরনের অপচয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর