সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বৃক্ষ নিধন

বন্ধ হোক আত্মঘাতী প্রবণতা

বন্ধ হোক আত্মঘাতী প্রবণতা

রাজধানী ঢাকার মাত্র ৮ শতাংশেরও কম এলাকা সবুজে আচ্ছাদিত। আন্তর্জাতিক মানদন্ডে কোনো নগরীর ২৫ শতাংশ এলাকায় বৃক্ষরাজি শোভা পাওয়ার কথা। এর এক-তৃতীয়াংশেরও কম বৃক্ষ রয়েছে মেগা সিটি ঢাকায়। বাংলাদেশের পতাকার বড় অংশজুড়ে আছে সবুজ। বাংলাদেশকে বলা হয় নদ-নদী ও সবুজ শোভার দেশ। কিন্তু দেশের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য প্রতিদিনই পাল্টে যাচ্ছে আমাদের অবিমৃশ্যকারী আচরণে। নদ-নদী, খাল-বিলের সংখ্যা কমছে ক্রমান্বয়ে। গাছপালা নিধনও অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের রাজধানী ঢাকার সিংহভাগ এলাকা ছিল এক সময় সবুজে ঢাকা। এখন গাছপালা ক্রমশই উধাও হচ্ছে। কংক্রিটের প্রাণহীন নগরী হয়ে উঠছে আমাদের রাজধানী। ২০১৯ সালে স্যাটেলাইট জরিপে ঢাকা মহানগরীতে ৮ শতাংশ সবুজ এলাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। তারপর বৃক্ষরাজি বাড়ার বদলে কমছে। নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছ। দুই সিটি করপোরেশন ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এ পাপের সঙ্গে নিজেদের জড়াচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য এভাবে গাছ কাটাকে ভয়ংকর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, গাছপালা ধ্বংসের ফলে বহুমাত্রিক ক্ষতি হচ্ছে। গাছ কমে যাওয়ার ফলে বায়ুদূষণ বেড়ে যাচ্ছে। বাড়াচ্ছে দাবদাহ। গাছের সঙ্গে বৃষ্টিপাতের সম্পর্ক রয়েছে। যেখানে সবুজ থাকে সেখানে বায়োডাইভারসি থাকে। গাছপালা থাকলে সেখানে পাখির আনাগোনা থাকে। কাজেই গাছপালা নিধন প্রক্রিয়া মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলছে। মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়ন সম্ভব নয়। ঢাকায় উন্নয়ন কাজ করে বেশ কয়েকটি সংস্থা। প্রত্যেকের নিজ নিজ উন্নয়ন পরিকল্পনায় থাকে শুধুই অবকাঠামো উন্নয়ন। কোনো সংস্থার ভাবনাতেই সবুজায়নের বিষয়টি নেই। ঢাকার অধিকাংশ মাঠ ও পার্ক সিটি করপোরেশনের অধীনে। এসব মাঠ ও পার্কে উন্নয়নের নামে কংক্রিটের ঢালাই পড়েছে। উধাও হচ্ছে সবুজ এলাকা। এই আত্মঘাতী প্রবণতা থেকে সরকার, দুই সিটি করপোরেশন এবং নগরবাসী সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি এলাকায় পথের পাশে এবং প্রতিটি বাড়িতে গাছ রোপণে প্রয়োজনে বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর