মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে ইসলামী নির্দেশনা

মো. আবু তালহা তারীফ

ডেঙ্গু প্রতিরোধে ইসলামী নির্দেশনা

ডেঙ্গুজ্বর মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৩-এ। ৩০ জুলাই এক দিনে ২ হাজার ৭৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন, যা এর আগে এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। রবিবার আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১ হাজার ৭৮ আর ঢাকার বাইরের ১ হাজার ৬৮৬ জন। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে সাতজন ঢাকার ও তিনজন বাইরের। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৩২ জন।  ঘরে-বাইরে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এমনকি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পেতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন হলো পরিষ্কার ও সুন্দর পরিবেশ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় থাকার ব্যাপারে ইসলামে ব্যাপক নির্দেশনা রয়েছে। অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ যেমন ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, মটকা, নির্মাণাধীন বাড়ির চৌবাচ্চাসহ অপরিষ্কার পানির পাত্রে মশা জন্মায়। মশা নিধনে সর্বপ্রথম প্রয়োজন পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশের প্রতি ইসলামে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রসুল (সা.) বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ।’ এডিস মশার কামড়ে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গুজ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়। ইবাদত-বন্দেগিতে অনেকে কষ্ট হয়। সুন্দরভাবে ইবাদত করার জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্য ঠিক রাখা। আর স্বাস্থ্য মানব জীবনের বড় একটি নিয়ামত। কিয়ামতের দিন বান্দাকে নিয়ামত সম্পর্কে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি করা হবে তা হলো তার সুস্থতা সম্পর্কে। রসুল (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে আমি কি তোমাকে শারীরিক সুস্থতা দিইনি?’ (তিরমিজি)

আমাদের সবার ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে বাড়ির পাশে সুন্দর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি করে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অসুস্থ হলে প্রথমে সে আল্লাহর রহমত প্রত্যাশা করবে। আল্লাহ রোগ দিয়েছেন তিনিই সুস্থতা দান করবেন- এ বিশ্বাস সুদৃঢ় করতে হবে। আল্লাহর ওপর ভরসার পাশাপাশি ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করাও ইসলামের শিক্ষা। জ্বর দেখা দিলে রোগীকে এক থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। আতঙ্কিত না হয়ে নিকটস্থ সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করে কিংবা অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা করাতে হবে। ইসলামে রোগ হলে চিকিৎসা করার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহর বান্দারা, তোমরা সুস্থ হওয়ার জন্য চিকিৎসা গ্রহণ করো। কেননা আল্লাহ এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি যার চিকিৎসা নেই। তবে একটি রোগ আছে যার কোনো প্রতিষেধক নেই। তা হলো বার্ধক্য।’ (আবু দাউদ)

 

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

সর্বশেষ খবর