বৃহস্পতিবার, ৮ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনার এই পরিণতি কেন

মহিউদ্দিন খান মোহন

শেখ হাসিনার এই পরিণতি কেন

ভীষণ উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল দেশবাসী। কী হবে পরিস্থিতি, ঘটনা কোনদিকে মোড় নেবে কেউ-ই বুঝতে পারছিলেন না। তবে সবাই চেয়েছেন এ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির অবসান হোক। কিন্তু সেই অবসান যে এমন একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে হবে তা ছিল সবারই ধারণার বাইরে। গত পনেরো বছর ধরে শেখ হাসিনার প্রবল দাপটের সঙ্গে পরিচিত বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার! আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যাকে ‘লৌহমানবী’ বলে তোষামোদ করত, তিনি জনতার ক্ষোভের তাপে এমন মোমের মতো গলে যাবেন এটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। অনেকেরই ধারণা ছিল, শেষ পর্যন্ত হয়তো আন্তর্জাতিক কোনো মিত্রের সহায়তায় তিনি এবারও টিকে যাবেন। কিন্তু সেই সাহায্য বোধহয় তিনি পাননি। অনুমান করা যায় যে মুরব্বিদের সমর্থন-সহযোগিতায় তিনি এত বছর ক্ষমতার মসনদে টিকেছিলেন, তারা হয়তো মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন।

ইতিহাসে এমন ঘটনার অনেক নজির আছে। আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসেও ইয়াহিয়া খান আমেরিকা ও চীনের সাহায্যের আশায় প্রহর গুনছিল। কিন্তু সেই সাহায্য আর আসেনি। ফলাফল, মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে পাকবাহিনীর পরাজয় এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ইরানের শাহেনশাহ রেজা শাহ পাহলবী ছিলেন আমেরিকার মদতপুষ্ট দুঃশাসক। ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লা রুহুল্লা খোমেনির নেতৃত্বে জনগণ যখন সর্বাত্মক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ল, সৃষ্টি হলো ইরানিদের ভাষায় ইসলামী বিপ্লব। পতনের সেই সময়ে আমেরিকা ইরানের শাহকে কোনো সাহায্য করেনি। ফিলিপাইনের স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসও আমেরিকার মদতপুষ্ট ছিলেন। ১৯৮৯ সালে গণবিক্ষোভের মুখে যখন তার পতন হয়, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি মিত্র আমেরিকা। ইতিহাসের চরম শিক্ষা হলো, পতন ঘনিয়ে এলে বিদেশি মিত্ররা কেউ পাশে থাকে না। আজ প্রবল প্রতাপশালী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে দেশান্তরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু কেন তাকে এ পরিণতি বরণ করতে হলো?

এদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া একটি অনন্য সাধারণ নাম। একটি প্রশ্নবিদ্ধ মামলার সূত্রে প্রহসনের বিচার করে তাঁকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ছয় বছর ধরে। বিএনপি কর্মী শুধু নয়, সাধারণ মানুষের দাবি ছিল, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার
অনেকেই কল্পনা করতে পারেননি, শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের এমন পরিণতি হবে। দেশে ঘটে যাবে এমন লঙ্কাকাণ্ড। চাটুকার পরিবেষ্টিত শেখ হাসিনা বোধকরি নিজেও কল্পনা করতে পারেননি, যে ঘরের ভিতর তিনি নিশ্চিন্তে বসেছিলেন, ঘুণপোকা সে ঘরের খুঁটিকে ভিতর থেকে খেয়ে ফেলেছে। তাই শরীরে দেখা দেওয়া একটি ফুঁসকুড়ি যে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার অভাবে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে, এটা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন। যে কারণে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ধর্তব্যের মধ্যে নেননি। তিনি এটাও ভুলে গিয়েছিলেন, এদেশে তাঁর সমর্থকদের দ্বিগুণেরও বেশি মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে। এক দিন তারা সুযোগ পেলে যে সেটা কাজে লাগাবে, এটা তাঁর মনে ছিল না। থাকলে অভিজ্ঞ রাজনীতিকের মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেন। কিন্তু পতন বা সর্বনাশ ঘনিয়ে এলে মানুষ একের পর এক ভুল করতে থাকে। এক্ষেত্রেও তাই করেছেন শেখ হাসিনা। ক্ষমতার ঘেরাটোপে বসে বাইরের অনেক কিছুই দৃষ্টিগোচর হয় না। শেখ হাসিনা তাঁর পারিষদ-চাটুকারদের দ্বারা এমনভাবে বেষ্টিত ছিলেন যে, বাস্তবতা উপলব্ধি করতে সক্ষম হননি।

অনেকের মতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে গণবিস্ফোরণ ঘটেছে, গত পনেরো বছরে এর বারুদ স্তূপীকৃত হয়েছে। গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার খর্ব করা, তাঁর দলের এমপি-মন্ত্রী-নেতাদের সীমাহীন লুটপাট ও সন্ত্রাস, অর্থনীতির বেহাল দশা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বাকাশে গমন, সর্বোপরি মানুষের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা জনমনে ক্ষোভের আগুন ধূমায়িত করছিল। সরকারের দমন নীতির কারণে তারা তাদের সেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারেনি। যেই সুযোগ পেয়েছে, তাদের সে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির মতো লাভা উদ্গীরণ করে সবকিছু ভস্ম করে দিয়েছে। এই পনেরো বছর আমরা দেখেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চারপাশে তেলবাজ চাটুকারদের ভিড়। বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম তাঁর সাম্প্রতিক অনেক লেখায় এসব তৈল মর্দনকারী সুবিধাবাদীদের থেকে সাবধানে থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করছিলেন। কিন্তু সেসব সতর্কবার্তা শেখ হাসিনার চৈতন্যোদয় করতে পেরেছিল বলে মনে হয় না। এ তৈল মর্দনের বিষয়টি প্রকট আকার ধারণ করত শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে। প্রশ্ন করার পরিবর্তে ‘নামিদামি’ সাংবাদিকরা শেখ হাসিনাকে তুষ্ট করার জন্য বাংলা ভাষায় যতরকম তোষামোদি শব্দ-বাক্য আছে, তার প্রায় সবই ব্যবহার করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মেঘালয়ের তুরা পাহাড়ের তেলঢালায় মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর হেডকোয়ার্টার্স ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সংবাদ সম্মেলন করতেন, আমার মনে হতো গণভবন ‘তেলঢালা’ ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতার রঙিন চশমা চোখে থাকায় শেখ হাসিনা ওইসব তৈলাক্ত কথায় আমোদিত হয়েছেন, বাস্তবতা উপলব্ধির চেষ্টা করেননি।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল, তখন বিশিষ্টজনেরা শেখ হাসিনাকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পরামর্শ তিনি গ্রহণ করেননি। বরং শক্তি দিয়ে সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছেন। আর তাঁর দলের নেতারা এমনভাবে কথা বলতেন, যেন এ ধরায় তারা ঐশ্বরিক শক্তি নিয়ে এসেছেন, কেউ তাদের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না। কিন্তু দৈহিক বা পেশিশক্তি দিয়ে যে সব সমস্যার সমাধান করা যায় না, তার নজির ইতিহাসে অনেক আছে। মনে পড়ছে, ১৯৭৮ সালের এশিয়ান যুব ফুটবল টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের হতাশাজনক পারফরমেন্সের পর এক ক্রীড়া সাংবাদিক একজন খোলোয়াড়কে বলেছিলেন, ‘শুধু পা দিয়ে খেললে হয় না, মাথা দিয়েও খেলতে হয়’। সে খোলোয়াড়ের চটপট উত্তর- ‘কেন, হেড তো করি’। ওই খেলোয়াড় সাংবাদিকের কথার মর্মার্থই অনুধাবন করতে পারেনি। মাথা দিয়ে খেলা যে হেড করা নয়, বুদ্ধি খাটিয়ে খেলা, সেটা তার হেড করা মোটা মাথায় আসেনি। আওয়ামী লীগের নেতারাও সম্ভাবত মাথা দিয়ে খেলাকে হেড করাই বুঝেছেন।

এ কথা কিছুতেই অস্বীকার করা যাবে না, শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি উক্তি বহুলাংশে দায়ী। তাঁর ‘এই আন্দোলন ঠান্ডা করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট’ দম্ভোক্তিটি চৈত্রের প্রখর রোদে তেতে থাকা খড়-বিচালির স্তূপে একটি জ্বলন্ত দিয়াশলাইয়ের কাঠি ছুড়ে দেওয়ার কাজ করেছে। তাঁর সে উক্তিকে ‘আকেলমান্দ ক্যা লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়’ ধরে নিয়ে ছাত্রলীগের ‘মর্দে মুমিন’রাও লাঠিসোঁটা হাতে নেমে পড়েছিল রাস্তায়। ‘রাজা যত বলে পারিষদ দলে বলে তার শতগুণ’- কবিগুরুর কবিতার এ পঙ্ক্তিকে যথার্থ প্রমাণ করে তারা হামলে পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর। টেলিভিশনের খবরে ছাত্রলীগের সেই অ্যাকশনের ভিডিও ফুটেজ দেখে বিস্ময়-বেদনায় বিমর্ষ হয়েছি। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি মেয়ে-শিক্ষার্থীরাও। কাপুরুষ না হলে কেউ মেয়েদের গায়ে হাত তোলে না- এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে আমাদের সমাজে। নিরীহ বা আন্দোলনে অংশ নেওয়া মেয়ে-শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পেটানো দলমত নির্বিশেষে কেউ-ই মেনে নিতে পারেননি। প্রজ্ব¡লিত আগুনে এক-দুই বালতি পানি ছুড়ে মারলে অগ্নিশিখা আরও দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠান্ডা করতে ছাত্রলীগ তদ্রুপ মনে হয়েছে। ওদের লাঠি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবদমিত না করে আরও বেশি উত্তেজিত করেছে। বিএনপি নেতারা এতদিন আওয়ামী লীগকে বলতেন, ‘পুলিশ ছাড়া মাঠে নামলে দশ মিনিটও টিকবেন না’। এবার পুলিশ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মী-ক্যাডাররা এক দিনের

২৮ জুলাই ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার স্টাইলে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র করেছিল একটি মহল। এর তিন দিন পর ৩১ জুলাই শেখ হাসিনা বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার মতো সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা ছিল। কাকতালীয় ব্যাপার হলো ঘটনা ঘটল শ্রীলঙ্কার স্টাইলেই। তারা কি ভাবতে পেরেছিলেন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সংসদ ভবনে ক্ষুব্ধ জনতা ঢুকে পড়ে ভাঙচুর ও লুটতরাজ করবে? সময়ের হিসাব মিলিয়ে দেখা যায়, শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও হেলিকপ্টারে চড়ে উড়াল দেওয়ার আধঘণ্টা পরেই ক্ষুব্ধ জনতা গণভবনে ঢুকে পড়েছিল। যাওয়ার আগে শেখ হাসিনা নাকি একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় তাকে দেওয়া হয়নি। এটা করতে গেলে ক্ষুব্ধ জনতার রুদ্ররোষের কবলে পতিত হতেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। আর তাহলে ঊনপঞ্চাশ বছর পরে আগস্ট মাসে আরেকটি নারকীয় ঘটনা ঘটতে পারত। আল্লাহ রক্ষা করেছেন, গণভবনের মাটি কারও রক্তে রঞ্জিত হয়নি। ক্ষুব্ধ জনতা গণভবনের আসবাবপত্র যেভাবে নিয়ে গেছে, বাংলাদেশে এমন ঘটনার নজির নেই। চেয়ার টেবিল, খাট, আলমিরা, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, এমনকি ডিপ ফ্রিজে রাখা মাছও তুলে নিতে তারা ভোলেনি। জনতার এ ক্ষুব্ধতা আকস্মিক নয়। দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এ ঘটনায়।

কেন জনতার এ রুদ্ররোষে পতিত হতে হলো আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে? শুধুই কি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তা দমনে নির্বিচারে মানুষ হত্যার কারণে? এটা ঠিক, অগণিত মানুষকে হত্যা করায় দেশবাসী প্রচণ্ডভাবে ক্ষিপ্ত হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি। যে জন্য আন্দোলনের শেষদিকে তারা সবরকম ভয়ভীতি উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে এসেছিল। তবে এটা এক দিন বা এক মাসের ক্ষোভ নয়। গত পনেরো বছর ক্ষমতায় থেকে শেখ হাসিনা ভুলের পাহাড় তৈরি করেছেন। শেষ সময়ে সেই পাহাড় ডিঙিয়ে সমতলে আসা তার পক্ষে আর সম্ভব হয়নি। বিরোধী মতকে দমন করতে গিয়ে তাঁর সরকার বহু নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে জেলবন্দি করেছে, পুলিশ-র‌্যাব দিয়ে হত্যা করা হয়েছে অসংখ্য মানুষকে।

এদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া একটি অনন্য সাধারণ নাম। একটি প্রশ্নবিদ্ধ মামলার সূত্রে প্রহসনের বিচার করে তাঁকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ছয় বছর ধরে। বিএনপি কর্মী শুধু নয়, সাধারণ মানুষের দাবি ছিল, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার। আমি নিজেও একাধিকবার পত্রিকার কলামে প্রধানমন্ত্রী (সাবেক) শেখ হাসিনার কাছে অনুনয়বিনয় করেছিলাম ম্যাডাম খালেদ জিয়ার মুক্তির জন্য। এই সেদিনও বাংলাদেশ প্রতিদিনে এ সম্পর্কে আমার লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল- ‘রাজনৈতিক নয়, একটি মানবিক আবেদন’ শিরোনামে (১৩ জুলাই, ২০২৪)। এর আগে ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে একই আবেদন জানিয়ে লিখেছিলাম- ‘রাজনীতি নয়, মানবিকতার দাবি’ শিরোনামে উপসম্পাদকীয়। কিন্তু পাষাণে মাথা কুটে যেমন লাভ নেই, এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! যে ক্ষমতার দম্ভে শেখ হাসিনা কারও আবেদন-নিবেদনকে ধর্তব্যের মধ্যে না এনে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে দেশে আটকে রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিলেন, তিনি এখনো সুস্থ অবস্থাতে দেশেই আছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা আজ দেশান্তরী। আর কোনোদিন দেশে ফিরতে পারবেন কি না তাও অনিশ্চিত।

ক্ষমতার দম্ভ আর অপব্যবহার একজন শাসকের কী পরিণতি বয়ে আনে শেখ হাসিনা তাঁর অতি সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত। এ থেকে রাজনীতিকদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

সর্বশেষ খবর