সুন্দরবন বাংলাদেশের অহংকার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাদাবন এটি। ঘূর্ণিঝড় টর্নেডো ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলভাগের লাখ লাখ মানুষকে সুরক্ষা দেয় এই বাদাবন। সুন্দরবনের আরেকটি পরিচিতি এই বন ব্যাঘ্রকুলের শ্রেষ্ঠ প্রজাতি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণ ভূমি। আশার হলো সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২৩ সালের জরিপ অনুযায়ী এ সংখ্যা এখন ১২৫। সোজা কথায় প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বাঘের সংখ্যা ২ দশক ৬৪। ২০১৫ সালের তুলনায় বাঘ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। সে সময় বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। সর্বশেষ জরিপে ২১টি বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেলেও তা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কারণ শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ২০১৫ ও ২০১৮ সালে মাত্র ৫টি শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল। জরিপের ছবি ও তথ্য বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। এ কাজে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হয়। জরিপটি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে চলতি বছরের মার্চে শেষ হয়। সুন্দরবনের ৬০৫টি গ্রিডে ১ হাজার ২১০টি ক্যামেরা ৩১৮ দিন রেখে দেওয়া হয়, যার মধ্যে ৩৬৮টি গ্রিডে বাঘের ছবি পাওয়া যায়। প্রায় ১০ লক্ষাধিক ছবি ও ভিডিও থেকে ৭ হাজার ২৯৭টি বাঘের ছবি পাওয়া যায়। মঙ্গলবার বাঘ জরিপ সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি দেশের সবার জন্য আনন্দের। বাঘ সংরক্ষণে সরকার ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করছে। সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি সুখবর হলেও এতে আত্মসন্তুষ্টি লাভের সুযোগ নেই। সুন্দরবন সুরক্ষায় বাঘের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। এ জন্য বন্ধ করা দরকার বাঘ শিকার। প্রতি বছর বাঘ হত্যার অপকর্ম ঘটায় শিকারিরা। বাঘের চামড়া এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অনেক দামি হওয়ায় এ ধরনের অপরাধ ঘটায় অবৈধ শিকারিরা। সুন্দরবনের সুরক্ষায় এ বিষয়ে সরকারকে আরও আন্তরিক হতে হবে।