পঞ্চগড়ে ৯০ দশকে আলোছায়া প্রেক্ষাগৃহের পাশেই গড়ে ওঠে ছায়াছন্দ সিনেমা হল। এই দুই প্রেক্ষাগৃহকে কেন্দ্র করে শহরের মূল রাস্তার নামও হয়ে যায় সিনেমা রোড। বর্তমানে সিনেমা রোড আছে, আছে হলের ভবন; শুধু দরজায় ঝুলছে তালা। ২০১৬ সালের দিকে দু’টো হলই বন্ধ হয়ে যায়।
লোকসান গুনতে গুনতে ২০১৪ সালের দিকে বন্ধ হয়ে যায় টুনির হাটের ঝংকার সিনেমা হল। হল মালিক ওয়াজেদ আলী এখন ভাঙ্গারির ব্যবসা করছেন। হলটি এখন পুরোনো কাগজের গুদাম। এভাবে জেলার ১০ লাখ মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত ১৩ টি সিনেমা হল এখন বন্ধ। ফলে জেলায় বিনোদনের সংকট তৈরি হয়েছে। একই সাথে মোবাইল বা গ্রামীণ দোকানে বিদেশি সিনেমা, ওয়েব সিরিজ বা অন্য কোনো কন্টেন্টে আসক্ত হয়ে পড়ছেন ‘সিনেমাপ্রেমী’ তরুণ সমাজ।
হল মালিকরা বলছেন, ভালো সিনেমার আশায় দিন গুনছেন তারা। সরকারি সহযোগিতা পেলে আবার সিনেমা হল চালু করবেন তারা।
আলোছায়া ও ছায়াছন্দ প্রেক্ষাগৃহের মালিক কামরুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের হলে পুড়ে গিয়েছিলো । এই এলাকায় একটাই তখন সিনেমা হল । তা আবার চালু হয়। কিন্তু কাটপিস সিনেমা ব্যবসা শুরু হলে হল বন্ধ করে দেই। এখন ভালো সময় এসেছে। সরকার সহযোগিতা করলে অবশ্যই আমরা দুটি প্রেক্ষাগৃহই চালু করবো।’একই কথা জানালেন ঝংকার সিনেমা হলের মালিক ওয়াজেদ আলী।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আবু তোয়বুর রহমান জানান, ‘সিনেমা হলগুলো চালু করতে হলে হল মালিকদের সহযোগিতা করতে হবে। সিনেমা হল চালু হলে আবার সেই সময়ের স্মৃতিমাখা দিনগুলো ফিরে আসবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ প্রয়োজন।’
স্থানীয় তরুণরাও বলছেন, সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদেরকে বিকল্প বিনোদন মাধ্যম বেছে নিতে হচ্ছে। অনেকেই ভিডিও গেমেও আসক্ত হচ্ছেন। নেশায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
সিনেমা কেবল বিনোদন মাধ্যম নয় বাঙালি সংস্কৃতির ধারক-বাহক বলেও মনে করছেন পঞ্চগড়ের সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকে। তাই তারাও সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে সিনেমা হলগুলো ফের চালু করার দাবি জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল