স্থানীয় ধর্মীয় গুরুদের বিরোধিতা উপেক্ষা করে সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকার ‘থ্রি-পারসনস বেবি’ [২ নারী ও ১ পুরুষের ডিএনএ] জন্মদানের লক্ষ্যে একটি প্রক্রিয়ার অনুমোদন দিয়েছে। পৃথিবীতে ব্রিটেনই একমাত্র দেশ যেটি কিনা এক সন্তানের তিন বাবা মা থাকার পদ্ধতিকে অনুমোদন দিলো।
'থ্রি-পারসনস বেবি' সংক্রান্ত প্রস্তাবটির উপর সম্প্রতি ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে এক ভোটাভুটি হয়। এতে ৩৮২ জন এমপি আইনটির পক্ষে আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১২৮ জন এমপি। প্রস্তাবটি পাস হওয়ায় ‘থ্রি-পার্সনস বেবি’ জন্মদানের প্রক্রিয়া চলতি বছর থেকেই শুরু হচ্ছে। এমনকি ২০১৬ সাল নাগাম প্রথম থ্রি পারসনস বেবির জন্মদান সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। হিউম্যান ফার্টিলাইজেশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি অথরিটি নিউক্যাসলের ওয়েলকাম ট্রাস্ট সেন্টার ফর মাইটোকন্ড্রিয়া রিসার্চ এ প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন করবে।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হলেও উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসে চলতি বছরের মে মাসে প্রস্তাবটি উত্থাপিত হবে। প্রস্তাবটির অনুমোদন দেওয়া প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন বলেন, 'আমরা কোনোভাবেই ঈশ্বরের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছি না। আমরা শুধু বাবা-মার একটি সুস্থ সন্তানের বিষয়টি নিশ্চিত করছি।'
উল্লেখ্য, 'থ্রি পারসন বেবি' প্রক্রিয়ায় কোনো দম্পতির ডিএনএর সঙ্গে তৃতীয় কোনো নারীর ডিএনএ ব্যবহার করা হবে। মায়ের কাছ থেকে সন্তানের শরীরে জটিল জিনগত রোগের বিস্তার ঠেকাতেই মূলত এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা।
এ প্রক্রিয়াতে ধ্বংসাত্মক কোষ এড়াতে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএতে পরিবর্তন আনা হবে। মাইটোকন্ড্রিয়া খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। মাইটোকন্ড্রিয়া মানবদেহের ক্রোমোজমের নিউক্লিয়ার ডিএনএও বহন করে। এই ক্রোমোজমের মধ্যেই মজুদ থাকে আমাদের জিনের তথ্যগুলো।
শুধু মায়ের শরীর থেকেই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শিশুর শরীরে যায়। অনেক ক্ষেত্রে মায়ের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএতে ডায়াবেটিস, মৃগী, পেশীর অক্ষমতা, স্ট্রোক, অন্ধত্বসহ নানা ধরনের সমস্যা থাকে। এ রোগগুলো শিশুর মধ্যেও প্রবাহিত হয়। নতুন পদ্ধতিতে এই প্রবাহ রোধ করা সম্ভব হবে।
সূত্র: বিবিসি ও মেইল অনলাইন
বিডি-প্রতিদিন/ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/শরীফ