গ্রামবাসীর অভিযোগ- গত এক মাস ধরে গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছিল মেছো বাঘটি। প্রতিদিনই গ্রামবাসীর হাঁস, মুরগি, ছাগল ধরে নিয়ে মেরে ফেলা ও খেয়ে ফেলার ঘটনা ঘটছিল। বাঘটিতে ধরার জন্য এলাকাবাসী মঙ্গল সর্দারের বাড়ির পাশের আখ ক্ষেত্রের পাশে একটি ফাঁদ পেতে রাখে। বেচারা বাঘ কি আর এত বুদ্ধি রাখে। ক্ষুধা লাগলে যেখানে খাবার সেখানেই হামলা চালায়। তাই ফাঁদে পড়তে সময় লাগল না বেশি।
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মঙ্গল সর্দারের মেয়ে হিরা সুলতানা গিয়ে দেখতে পান ফাঁদে বড় আকারের একটি জন্তু ধরা পড়েছে। তার চিৎকারে গ্রামবাসী এসে মেছো বাঘটিকে উদ্ধার করে লোহার শিকল ও রশি দিয়ে বেঁধে গ্রামের জিয়াউর রহমানের বাড়িতে নিয়ে রাখে। কিছু উত্তম-মাধ্যমও পড়ে বাঘটির ওপর। আটকের পর পরই পশুপাখি ও গবাদি পশু হারানো মানুষদের কেউ কেউ তাদের জমে থাকা ক্ষোভ বাঘটির ওপর ঝেড়ে ফেলেন। স্থানীয় কিছু সচেতন ব্যক্তির কারণে মৃত্যুর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যায় বিপন্নের পথে এগিয়ে যাওয়া দুর্লভ প্রাণীটি।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের খোকসার হাট গ্রাম থেকে আটক করা হয় বাঘটিকে।
খবর পেয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাবিবউল্লাহ গ্রামবাসীর কাছ থেকে বাঘটি উদ্ধার করতে বন বিভাগকে নির্দেশ দেন। বনবিভাগ যখন বাঘটিকে উদ্ধার করে তখন এটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। এরপর নিয়ে গিয়ে চলে এটির সেবা-পরিচর্যা।
মেছোবাঘটিকে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে বনবিভাগের দায়িত্বে রাখা হয়েছে। জানা গেছে, বাঘটিকে এখন ঢাকায় নিয়ে চিড়িয়াখানায় রাখার কথা ভাবছে বনবিভাগ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, মেছোবাঘটি সুস্থ হয়ে উঠেছে এবং বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা মেছো বাঘটি শুক্রবার উদ্ধার করে মধুখালীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেই। পরে বাঘটি সুস্থ হলে আমাদের জিম্মায় রেখেছি।’
তিনি জানান, শনিবার মেছো বাঘটিকে ঢাকায় পাঠানো হতে পারে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতিকালে জেলার সদর উপজেলা পদ্মানদীর বিভিন্ন চরাঞ্চলে বাঘের আনাগোনা লক্ষ করা যাচ্ছিল। ২৭ মার্চ একটি মেছোবাঘ হত্যাও করে ফেলা হয়। এ ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যে মধুখালী থেকে বাঘটি উদ্ধার করা হলো।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ মার্চ ২০১৫/ এস আহমেদ