বগুড়ার নন্দীগ্রামে স্ট্রবেরী চাষ করে সফলতা পেয়েছেন দিনমুজুর রাজধনচন্দ্র। প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে স্ট্রবেরি চাষের পর আয় করেছেন ৫০ হাজার টাকা। অভাবের সংসারে দিনমুজুর রাজধনচন্দ্র ভাবছেন আয়কৃত টাকা দিয়ে জমি বর্গা নিয়ে স্ট্রবেরী জমি বৃদ্ধি করা।
জানা যায়, বগুড়ার নন্দীগ্রামের ভাটরা ইউনিয়নের মাটিহাঁস গ্রামে থাকেন স্ট্রবেরী চাষি রাজধনচন্দ্র। বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি বিক্রি করে আয়ের পথ সুগম করেছেন। রাজধন চন্দ্রের স্ট্রবেরি চাষ দেখে গ্রামের অনেকেই স্ট্রবেরি চাষ আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
স্ট্রবেরী চাষি রাজধন চন্দ্র জানান, ৫সদস্যের পরিবার চলতো দিনমুজুর দিয়ে। তার এক স্বজনের মাধ্যমে স্ট্রবেরী সম্পর্কে জেনে আগ্রহী হন। স্ট্রবেরির চারা সংগ্রহ করে একবিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে সঠিক পরিচর্যার পর ভাল ফলন পেয়েছে। চারা ক্রয়, চাষ, রোপন, সেঁচ, নেটজাল ও ক্ষেতের বেড়াসহ যাবতীয় পরিচর্যায় একবিঘাতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা।
তিনি আরো বলেন, হরতাল অবরোধের কারণে ফল বিক্রিতে একটু সমস্যা হলেও স্থানীয় বাজারে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার টাকারও বেশি স্ট্রবেরি ফল বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, প্রতিবেশির কাছ থেকে ১ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন। স্ট্রবেরি বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া খরচ ও সংসারের কিছু প্রয়োজনীয় আসবাব ক্রয় করেছেন। বাকি টাকা দিয়ে আরো কিছু জমি বর্গা নেবেন।
অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ রসালো ফল হওয়ায় স্ট্রবেরি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নন্দীগ্রাম উপজেলায়। স্ট্রবেরির চাহিদাও বাড়ছে। প্রথম দিকে মাঘ মাসে প্রতি কেজি লাল টুকটুকে স্ট্রবেরী প্রায় ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি পাইকারি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। কালিগঞ্জ, আবাদপুকুর, চাপাপুর, গুলিয়া, চাকলমা, হাটকড়ই, পন্ডিতপুকুর, ওমরপুর, নন্দীগ্রামের স্থানীয় হাট-বাজারসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এ ফলগুলো বিক্রয় করা হচ্ছে।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্ট্রবেরি চাষ শুরু হয়েছে। তবে কি পরিমান স্ট্রবেরি চাষ হয়েছে তার হিসবা প্রক্রিয়া চলছে। স্ট্রবেরির চারা সাধারণত অগ্রাহায়ন মাসের মাঝামাঝি সময়ে রোপন করতে হয়। চারা রোপনের ৩০/৪০দিনের মাথায় ফলন আসে। তিন মাস ধরে ফল তোলা যায়। প্রতিটি গাছে তিন বার ফল ধরে। এক মৌসুমে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি ফল পাওয়া যায়। অন্যান্য সবজির পাশাপাশি চাষিদের স্ট্রবেরি চাষে উৎসাহ প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে, স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহী অনেক চাষি এ বিষয়ে জানতে আসছে।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মশিদুল হক জানান, স্ট্রবেরি চাষী রাজধন চন্দ্রের স্ট্রবেরি ক্ষেত পরিদর্শন করা হয়েছে। স্ট্রবেরি চাষে যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। চাষীরা স্ট্রবেরী চাষে আগ্রহী হলে কৃষি অফিসের সকল সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।