সমস্যা মানুষকে সমাধানের পথ খুঁজতে সামনে ঠেলে দেয়। দিনকে দিন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে আগুন সন্ত্রাসের দিকে এগুচ্ছে তাতে এর থেকে পরিত্রাণের জন্য নতুন নতুন পথও খুঁজতে হচ্ছে। সেই পথ ধরে পেট্রলবোমার আগুন মোকাবেলায় এবার বাজারে আসছে নতুন উদ্ভাবনা 'ফাইরেসকিউ'। হাতে বহনযোগ্য ছোট্ট প্লাস্টিকের বোতলটি (ফাইরেসকিউ) ছুড়ে মারলে মাত্র ৫ সেকেন্ডে নিভে যাবে সম্পূর্ণ আগুন। বিষয়টি এখন গবেষণার শেষ পর্যায়ে আছে।
শুধু পেট্রলবোমার আগুন নয়, কাঠ, তেল ও বৈদ্যুতিক আগুন নেভাতেও সক্ষম হাতে বহনযোগ্য এ বোতলজাত গ্যাসীয় তরল।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে আগুন নেভাতে এটি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। জাপান থেকে আমদানি করা তরল গ্যাস বোতলজাতসহ আনুষঙ্গিক সংরক্ষণ পদ্ধতি ঠিক করছে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিএমটিএফ)। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই বিএমটিএফ এটি বাজারজাত করবে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দর এলাকার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে চলা সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে মঙ্গলবার অগ্নিনির্বাপক 'ফাইরেসকিউ' দেখা গেছে। এটি ব্যবহার করে কীভাবে ৫ সেকেন্ডে আগুন নেভানো যায়, তার ভিডিও ফুটেজও সেখানে দেখানো হয়। বিএমটিএফের নির্দিষ্ট স্টলে দর্শনার্থীর জন্য এটি ছিল উন্মুক্ত।
স্টলটির দেখাশোনায় নিয়োজিত মেজর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, বর্তমানে যেভাবে যানবাহনে পেট্রলবোমা মেরে জানমালের ক্ষতি করা হচ্ছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই হাতে বহনযোগ্য এ অগ্নিনির্বাপক তরল পদার্থ ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটিকে 'হ্যান্ডহেল্ড ফায়ার রেসকিউ' বলা হয়।
এটি মূলত তিন ধরনের আগুনে (কাঠ, তেল ও বৈদ্যুতিক) সমানভাবে কার্যকর। তরল গ্যাস ৫০০ থেকে ১০০০ মিলিমিটার সাইজেই প্লাস্টিকের মসৃণ বোতলে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বোতলটি আগুনে নিক্ষেপমাত্রই এটি গলে তরল বেরিয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। আর ৫ সেকেন্ডে আগুন নিভিয়ে ফেলবে।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, বিএমটিএফে এটি নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষামূলক কাজ চলছে। জাপানি প্রযুক্তিতে উৎপন্ন তরল গ্যাস সংরক্ষণ ও ব্যবহারের নানা বিষয় নিয়ে কাজ চলছে। এটি বাজারজাত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এরইমধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে প্রজেক্ট ফাইল করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই এটি বাজারজাত করা হবে। জানা গেছে, একেকটি বোতলের দাম নির্ধারণ করা হতে পারে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ মার্চ ২০১৫/এস আহমেদ