আফগান তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে ১৯ বছর পার করলেন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর। এ উপলক্ষে গত রবিবার নিজেদের ওয়েবসাইটে মোল্লা ওমরের জীবনী প্রকাশ করেছে তালেবান। খবর বিবিসির।
আফগানিস্তানে চালানো ২০০১ সালে মার্কিন আগ্রাসনের পর থেকে তাকে জনসম্মুখে দেখা যায়নি। এমন অবস্থায় তার জীবনী প্রকাশ বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। মোল্লা ওমরকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১ কোটি ইউএস ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্লেষকদের ধারণা, সম্প্রতি মুসলিম বিশ্বে আইএসের (ইসলামিক স্টেট) উত্থানের কারণে নিজেদের ‘গুরুত্ব’ আরও ভালোভাবে তুলে ধরতে এ জীবনী প্রকাশ করল তালেবান। এ ছাড়া দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার বিষয়টিও রয়েছে।
৫ হাজার শব্দের ওই জীবনীতে মোল্লা ওমরের প্রিয় অস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বহনযোগ্য আরপিজি-৭ (রাশিয়ার তৈরি ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী রকেটসমৃদ্ধ গ্রেনেড লাঞ্চার)। তিনি সাধারণ জীবন-যাপন করেন এবং তার ‘বিশেষ’ কৌতুকবোধ রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে তিনি বর্তমানে কোথায় রয়েছেন তা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে, তার নিজস্ব কোনো বাড়ি বা ব্যাংক এ্যাকাউন্ট নেই।
জীবনীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৬০ সালে আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের খাকরেজ জেলার চাহ-ই-হিম্মত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর। ওমরের জন্মের পাঁচ বছর পর তার বাবা মৌলভী গোলাম নবী মারা যান। এরপর তার পরিবার উরুজগান প্রদেশে চলে আসে।
আশির দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে আক্রমণ করলে মাদ্রাসার পাঠ চুকিয়ে মুজাহিদ হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ওমর। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন তিনি। এ সময় তিনি চারবার আহত হন এবং ডান চোখ হারান।
১৯৯৪ সালে জাতিগত দাঙ্গা মোকাবেলায় ইসলামিক মুজাহেদীনের নেতৃত্ব নেন ওমর। এরই মাঝে ১৯৯২ সালে দেশটিতে কমিউনিজমের পতন ঘটলে ইসলামপন্থী আন্দোলন গড়ে তুলতে সমর্থ হন।
১৯৯৬ সালে ‘আমিরুল মুমেনীন’ উপাধি নিয়ে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হন ওমর। ওই বছরই আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল ও দেশটিকে ইসলামিক আমিরাত ঘোষণা করে ইসলামী শাসন কায়েম করে তালেবানরা।
জীবনীতে উল্লেখ রয়েছে, ইসলামী শরিয়া আইনকে সহ্য করতে না পেরে পশ্চিমারা ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আক্রমণ করে।
বিডি-প্রতিদিন/০৬ এপ্রিল ২০১৫/ এস আহমেদ