২৬ মার্চ, ২০২১ ১৬:০৯

বিলুপ্ত প্রজাতির কুমির ‘কালাপাহাড়’ অর্ধশত ডিম পেড়েছে

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বিলুপ্ত প্রজাতির কুমির ‘কালাপাহাড়’ অর্ধশত ডিম পেড়েছে

বাগেরহাটে হযরত খানজাহান (রহ:) মাজার শরীফের দীঘিতে মিঠাপানির বিলুপ্ত প্রজাতির ‘কালাপাহাড়’ নামের মা কুমিরটি আজ শুক্রবার ভোর রাতে অর্ধশত ডিম পেড়েছে। 

কুমিরটি খানজাহানের বিশাল দীঘির পূর্বপাড়ে মাটি খুঁড়ে ডিম পাড়ে। কুমিরের ডিম পাড়ার খবরে মাজার শরীফের হযরত খানজাহানের ভক্ত ও পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন। ডিম পেড়ে কুমির কালাপাহাড় এখন সেই ডিম ফুটাতে ‘তা’ দিচ্ছে। কুমিরের ওইসব ডিম থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটবে বলে আশা করছে মাজার শরীফের খাদেমসহ প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।

তবে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ ও বয়স্ক হবার জন্য গত ২০ বছরে খানজাহান শরীফের দীঘির কুমিরের ডিম থেকে কোন বাচ্চা ফোটেনি। তাই দেশের একমাত্র খানজাহানের শরীফের দীঘিতে শত-শত বছর ধরে  বসবাস করা মিঠাপানির কুমির বিলুপ্তির শংঙ্কা বাড়ছে প্রাণী বিশেষজ্ঞদের। 

ইতিপূর্বে খানজাহানের দীঘিতে বাস করে আসা ৫০০ এবং ৬০০ বছর বয়স্ক পুরুষ এবং মহিলা প্রজাতির ২টি কুমির মারা গেছে। বর্তমানে হযরত খানজাহানের দীঘিতে কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় নামে পুরুষ এবং মহিলা প্রজাতির মাত্র ২টি কুমির রয়েছে। এই দুটি কুমির মারা গেলেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে মিঠাপানি প্রজাতির কুমির। 

খানজাহানের দীঘির পূর্বপাড়ের বাসিন্ধা বিনা আক্তর জানান, 'আজ শুক্রবার ভোর রাত ৪টার দিকে কালাপাহাড় নামের মা কুমিরটি তার বাড়ীর মাটি খুঁড়তে থাকে। মাটি খোঁড়া শেষ হলে কালাপাহাড় অর্ধশত ডিম পেড়ে ধুলা-মাটি দিয়ে ওইসব ডিম ঢেকে দেয়।'

হযরত খানজাহানের শরীফের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী জানান, 'আমরা মাজার শরীফের খাদেম, হযরত খানজাহানের ভক্ত-আশেকানসহ সবাই আশা করছি এবার কুমিরের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটবে।'

এছাড়াও বাগেরহাট জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান জানান, 'হযরত খানজাহান (রহ:) মাজার শরীফের দীঘির কুমিরের অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহন ও বয়স্ক হবার কারণে গত ২০ বছরে ধরে ডিম থেকে কোন বাচ্চা ফুটছেনা। মা কুমির কালাপাহাড় ডিম পাড়ার সাথে সাথেই ডিম সংগ্রহ করে ইনকিউবেটরে রেখেও বাচ্চা ফোটানো যায়নি। পুরুষ কুমির ধলাপাহাড়ের ফার্টিলিটি না থাকায় মা কুমিরটির ডিম ফুটছেনা।' 

তিনি আরও বলেন, 'দ্রুতই প্রাপ্তবয়স্ক একটি মিঠাপানির পুরুষ কুমির বিদেশ থেকে সংগ্রহ করে খানজাহানের দীঘিতে ছাড়তে হবে। তা না হলে খানজাহানের দীঘির কুমিরের ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি এই দুটি কুমির মারা গেলেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে মিঠাপানি প্রজাতির কুমির।' 

                      
                
বি ডি প্রতিদিন/ অন্তরা কবির  

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর