২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:৩৯

উদ্বোধনের আগেই পায়রা সেতু যেন পর্যটন কেন্দ্র

দিনে দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী, রাতে বর্ণিল আলোকসজ্জা

রাহাত খান, বরিশাল

উদ্বোধনের আগেই পায়রা সেতু যেন পর্যটন কেন্দ্র

দিনে এবং রাতের পায়রা সেতুর আলাদা দৃশ্য। দিনে দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী আর রাতে বর্ণিল আলোকসজ্জায় নৈসর্গিক দৃশ্য। সাথেই শেষ বিকেলে সেতু সংলগ্ন বাগানের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে সাদা বক আর পানকৌঁড়ির ছোটাছুটি। আছে সংলগ্ন শেখ হাসিনা সেনানিবাস। পায়রা নদীর তাঁজা ইলিশ কেনার সুযোগও আছে সেতুর পাদদেশে। সব কিছু মিলিয়ে উদ্বোধনের আগেই পায়রা সেতু ঘিরে আকর্ষর্ণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালীর পায়রার দুই তীর। পর্যটন সম্ভাবনার কথা চিন্তা করেই পায়রা সেতুতে নান্দনিক নকশা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায়ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন বরিশালের পুলিশ সুপার। 

বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের ২৬ তম কিলোমিটারে লেবুখালীর পায়রা নদীর উপর ১ হাজার ১শ’ ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পায়রা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। জাতিসংঘের সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে যে কোন সময় সেতু উদ্বোধনের প্রস্তুতি রয়েছে কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এরই মধ্যে পায়রা সেতুর নান্দনিকতা দৃষ্টি কেড়েছে পর্যটকদের। দিনের এবং রাতের পায়রা সেতুর দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অনেকে। সেতুর নির্মাণ শৈলী এবং রাতের পায়রার আলোকসজ্জায় বিমুগ্ধ হন তারা। 

সেতুর দক্ষিণ-পূর্ব পাশের বাগানে শেষ বিকেলে ঝাঁকে ঝাঁকে সাদা বক আর পানকৌঁড়ির ছোটাছুটি নজর কারবে যে কারোর। সাথে আছে দেশের অন্যতম বৃহৎ আয়তনের শেখ হাসিনা সেনানিবাস। পায়রা নদী থেকে জেলেদের আহরিত তাঁজা ইলিশ কেনার সুযোগও আছে পর্যটকদের। এগুলো আকর্ষণ করেছে প্রকৃতি প্রেমীদের। সেতু এবং সেনানিবাস ঘিরে এই এলাকায় পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তারা। তবে পর্যটকদের জন্য সেখানে ভালোমানের রেস্তোরা, বিশ্রাম এবং টয়লেট বাথরুমের সুবিধা দরকার বলে মনে করেন পর্যটকরা। 

সেতু দেখাতে যাওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সহধর্মীনি বলেন, বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এত সুন্দর সেতু খুবই কম আছে। এই সেতুর নান্দনিকতা দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেন বলে তিনি জানান। তার মতো একই কথা বলেছেন অন্য পর্যটকরা। 

পর্যটনের কথা মাথায় রেখেই লেবুখালীতে ‘এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল স্টেট’ নকশায় নান্দনিক পায়রা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল। তিনি বলেন, দিনে এবং রাতের পায়রা সেতুর আলাদা সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো। যা এই অঞ্চলের পর্যটনকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে তারা আশা করেন। 

নান্দনিক এই সেতু পর্যটকদের দারুনভাবে আকৃষ্ট করবে বলে আশা বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদলের। তিনি বলেন, নদী, আবহাওয়া, নির্মল বাতাস এবং সেতুর চারিদিকের পরিবেশ-প্রকৃতির সাথে সৌন্দর্যপ্রেমীরা কিছু সময়ের জন্য হলেও মিশে যেতে পারবেন। এতে তারা প্রশান্তি পাবে। মন প্রফুল্ল হবে। সব কিছু মিলিয়ে পায়রা সেতু একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও স্বীকৃত হতে পারে বলে তিনি জানান। 

এদিকে পায়রা সেতু এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।  

লেবুখালীর পর্যটন ঘিরে নদীর দুই তীরে গড়ে উঠছে নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে পর্যটক ধরে রাখতে এখনই নদীর দুই তীরে আধুনিক মানের রেস্তোরা, বিশ্রামাগার এবং টয়লেট-বাথরুম সময়ের দাবি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর