১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৫:৩৩

পানের দোকানেই ঘুরছে স্কুল পড়ুয়া রাফিয়ার সংসারের চাকা

অনলাইন ডেস্ক

পানের দোকানেই ঘুরছে স্কুল পড়ুয়া রাফিয়ার সংসারের চাকা

ছোটো বয়সেই বড় সংসারে হাল ধরতে হয়েছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিয়া সুলতানাকে (১৮)। বাবা অসুস্থ, তাই জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে বাবার পানের দোকানে সহযোগিতা করছে রাফিয়া।

রাফিয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম (৫৮) চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লাটোলা গ্রামের বাসিন্দা। সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে নাচোলের মুরাদপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। জীবন ধারণের জন্য রফিকুল ইসলাম নাচোল বাসস্ট্যান্ডে ইসলামীয়া হোটেলের সামনে পানের দোকান দিয়ে ৪ মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। সম্প্রতি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা স্ট্রোকে অক্রান্ত হন তিনি। কিছুটা সুস্থ হলেও পুরোপুরি কর্মক্ষম হয়ে ওঠেননি রফিকুল।

তাই বাধ্য হয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি অসুস্থ বাবাকে সহযোগিতা করতে তার পানের দোকানে দু’বেলা বসেন রাফিয়া। 

মা-বাবার ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা নাচোল খুরশেদমোল্লা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। রাফিয়ার কোন ভাই নেই, তারা ৪ বোন। এরমধ্যে বড় বোন রাফিজা সুলতানা বিবাহিত। তিনি স্বামী ও পিতার সহযোগিতায় গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়ো টেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালেখা করছেন। মেজো বোন ফাওজিয়া খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারী কলেজে বিএসসি পড়ছে। এবং সেজো বোন রিজিয়া সুলতানা এ বছর নাচোল খুরশেদ মোল্লা সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে নাচোল মহিলা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছে। 

এ বিষয়ে ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা জানায়, লেখাপড়া ও সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার বাবা রফিকুল ইসলাম। তাই বাধ্য হয়ে লেখা-পড়ার পাশাপাশি অসুস্থ বাবাকে পান দোকানে নিয়মিত সহযোগিতা করে অসছে সে। রাফিয়ার দাবি, সে তার বাবাকে ছেলের অভাব বুঝতে দিতে চায় না। তাই পান দোকানে সহযোগিতা ও মনোবল জুগিয়ে সেও ভাল ফলাফল করে ভাল মানুষ হতে চায়। 

অসুস্থ রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ছোট মেয়ে রাফিয়া আমাকে ছেলের মত করে পানের দোকানে সহযোগিতা করছে। পান দোকানের আয় দিয়েই এখন আমার সংসার ও চিকিৎসা চলছে।    

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর