রাজধানীর ৩০০ ফিট এক্সপ্রেসওয়ে। দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মিত হলেও এখন অবৈধ পার্কিংয়ের দখলে সড়কটি। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনের সড়কটি অবৈধ পার্কিংয়ের দখলে থাকে সব সময়। পার্কিংয়ের কারণে দিনভর যানজট থাকে এক্সপ্রেসওয়েটির একাংশ। এতে সড়ক ব্যবহারকারীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা থাকছে। মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও পুলিশ যাওয়ার পর আবার দখলে চলে যায়। সড়ক দখল করে পার্কিং না করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হলেও কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার ‘উদ্বোধনের আগেই দখল ৩০০ ফিট সড়ক’ শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনো সড়কে পার্কিং করছে শিক্ষার্থীদের বহন করা ব্যক্তিগত গাড়িগুলো।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে ৩০০ ফিট সড়কটি এখনো অবৈধ পার্কিংয়ের দখলে রয়েছে। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ যেতে সড়কটির একাংশ শিক্ষার্থীদের বহন করা ব্যক্তিগত গাড়ির দখলে। বিশেষ করে স্কুল শুরু ও ছুটির সময় যানজট তীব্র হয়। শিক্ষার্থীদের স্কুলে নামিয়ে দেওয়ার পর কিছু গাড়ি চলে গেলেও অধিকাংশ গাড়ি সড়কের একপাশ দখল করে থাকে বিকাল পর্যন্ত। ওই সময় যানজট কিছুটা কম থাকলেও সকাল সাড়ে ১০টা, সাড়ে ১১টা, দুপুর ১টা, আড়াইটা ও সাড়ে ৩টায় স্কুল ছুটি হলে সড়কটি গাড়ির দখলে চলে যায়। বিশেষ করে দুপুর আড়াইটায় ছুটি হলে ঘণ্টাখানেক যানজটে আটকে থাকতে হয় এই সড়ক ব্যবহারকারীদের। প্রতিদিনই থাকে একই রকম চিত্র। তবে মাঝেমধ্যে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে মামলা দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। পুলিশ চলে গেলে আবার পার্কিংয়ের দখলে চলে যায় সড়কটি। এ বিষয়ে কথা হয় শিক্ষার্থীদের বহন করা গাড়ি চালক ইসমাইলের সঙ্গে। তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টায় আসি। শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দিয়ে এখানেই গাড়ি রেখে দেই। সড়কে কেন গাড়ি রাখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়ক ছাড়া আশপাশে গাড়ি রাখার জায়গা নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষও পার্কিংয়ের জায়গা রাখেনি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় রাখছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গাড়ি রাস্তায় রাখলে যানজট কিছুটা তো হবেই। তবে স্কুল ছুটির সময় যানজট থাকে। অন্য সময় থাকে না। সড়কে কথা হয় উবার চালক সফিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, যাত্রী সেবায় কাজ করায় প্রায় প্রতিদিনই যাতায়াত করতে হয়। এই সড়ক দিয়ে দ্রুত যাতায়াত করলেও স্কুলের সামনে এসে গাড়ির গতি কমে যায়। একই সঙ্গে প্রায়ই যানজট থাকে। স্কুল ছুটি হলে যানজট তীব্র হয়। কারণ রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে শিক্ষার্থী উঠায়। সব শিক্ষার্থী তো আর একসঙ্গে আসে না। কারও বিলম্ব হলে লাগে যানজট। আর এই যানজট শেষ হতে ৩০ ও ৪০ মিনিট এবং মাঝেমধ্যে ঘণ্টাও লেগে যায়। প্রশাসন কি দেখে না? এ বিষয়ে কথা হয় স্কুলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এক কর্মীর সঙ্গে। তিনি বলেন, সড়কের একপাশে এক সিরিয়ালে গাড়ি রাখতে বলা আছে। দুই সিরিয়ালে গাড়ি রাখতে নিষেধ করা আছে। সিরিয়ালের বাইরে যে গাড়ি রাখবে সে মামলা খাবে এমন নির্দেশনা দেওয়া আছে। কে নির্দেশনা দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তবে এক সিরিয়ালের বাইরে সড়কে গাড়ি রাখলে পুলিশ মামলা করে জানান তিনি। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) আবু রায়হান মোহাম্মদ সালেহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ৩০০ ফিট সড়কটি অবৈধ পার্কিংয়ের দখলে থাকছে বিষয়টি আমার নলেজে নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এরকম সমস্যা হলে ব্যবস্থা নিব।