বর্তমানে ভারতের আলোচিত ও সমালোচিত একটি নাম গুরমিত রাম রহিম সিং। নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে তাকে কারাগারে যেতে হলেও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কিছু দিন পরেই বিতর্কিত এই 'ধর্মগুরু'কে ‘প্রণাম’ জানিয়েছিলেন স্বয়ং মোদিও। তারপর গুরমিত রাম রহিম সিং নিজের ভক্তকুলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাঁরা যেন বিজেপিকেই ভোট দেন। শুধু তাই নয়, গুরমিত নিজের সিনেমাতেও মোদিকে দেখিয়েছিলেন এক ‘পরাক্রমী’ হিসেবে। তবে সেন্সরের কাঁচিতে বাদ যায় চরিত্রটি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
নায়ক, লেখক, পরিচালক— সবই তিনি। এ যাবৎ পাঁচটি ছবি মুক্তি পেয়েছে গুরমিতের। ষষ্ঠটি প্রায় তৈরি। কিন্তু ধর্ষণের দায়ে জেলে যাওয়ার পরে সেই ছবির ভাগ্য শিকেয়। প্রথম তিনটি ছবি ছিল ‘এমএসজি’ (মেসেঞ্জার অব গড) সিরিজের। চতুর্থ ছবির নাম ‘হিন্দ কা নাপাক কো জবাব’। বিষয়বস্তু— সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। ছবিতে এক ভারতীয় চরের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন গুরমিত। ‘দত্তক-কন্যা’ হানিপ্রীতকে দেখা গিয়েছিল এক নারী সেনা সদস্যের ভূমিকায়। তাঁরাই এই ছবির হিরো এবং হিরোইন। কিন্তু ছবিতে ‘পাকিস্তান’-কে জবাব দেওয়ার পুরো কৃতিত্ব মোদিকেই দিয়েছেন গুরমিত। ঠিক যে ভাবে গোটা বিজেপি তখন মোদির জয়ধ্বনি করছিল। এক জনকে মোদির মতো সাজিয়ে অভিনয়ও করানো হয়েছিল এই ছবিতে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড বলে, যদি প্রধানমন্ত্রীকে ছবিতে দেখানো হয়, তা হলে তাঁর অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।
সূত্রের খবর, দ্রুত ছবির মুক্তির জন্য গুরমিত আর সময় অপচয় না করে সেই অংশটি বাদ দিতে রাজি হয়ে যান। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, তখন সেন্সর বোর্ডের প্রধান ছিলেন বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত পহেলাজ নিহালনি।
এর পরে আর কোন ছবিতে মোদির চরিত্র রাখেননি গুরমিত। কিন্তু মোদি-প্রশংসায় পিছুও হটেননি। পঞ্চম ছবি ‘জাট্টু ইঞ্জিনিয়ার’ ছিল মোদিরই স্বচ্ছ-ভারত অভিযানের উপরে। সেই অভিযানে সামিল হওয়ায় ডেরা প্রধানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই ভোটে ভেল্কি দেখিয়ে হরিয়ানায় প্রথমবার ক্ষমতায় আসে বিজেপি। কিন্তু ধর্ষণের দায়ে গুরমিত জেলে যেতেই সুর পাল্টে তাঁর থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছে গোটা বিজেপি।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব