সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

দক্ষিণ এশিয়ায় কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন

ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট

দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল। সারা বিশ্বের তিন ভাগের এক ভাগ মানুষের বসতি এখানে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে এই দক্ষিণ এশিয়া। এখানে সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ বসবাস করে। চীন, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো না হয়ে এ অঞ্চলে এখনো তুলনামূলকভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ন্যূনতম। এই আটটি দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তান ও ভারতে। মারা গেছে ৭ জন।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এরই মধ্যে এ অঞ্চলের দেশগুলো বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যেটা যুক্তরাষ্ট্র নেয়নি। এ অঞ্চলে দেশজুড়ে স্কুল বন্ধ করে  দেওয়া হয়েছে। ভ্রমণে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক ‘হেভিওয়েট’ ভারত বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে, তারা এক সপ্তাহের জন্য বাইরে থেকে আসা সব আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল করছে। প্রতি মাসে এমন সব ফ্লাইটে ভারতে আসা-যাওয়া করে প্রায় ৫০ লাখ যাত্রী। ভারত সরকার বলছে, শনাক্ত করা হচ্ছে আক্রান্তদের। জনগণের মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন দাবি সত্য নয় বলেই মনে হচ্ছে। এমন কথা বলার জন্যই খুব সামান্য  টেস্ট করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা ভয় পাচ্ছেন যে, ভারত ও এর প্রতিবেশীরা বিশ্বের অন্য স্থানের মতো ভয়াবহতার মুখে পড়তে পারেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই সংক্রমণ দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে এবং সেখানকার হাসপাতালগুলো এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এরই মধ্যে গত এক সপ্তাহে এ অঞ্চলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের ভাইরাস বিষয়ক সুপরিচিত বিশেষজ্ঞ টি জ্যাকব  জোন বলেন, প্রকৃত সত্যটা দেখা দেবে সামনের কয়েক দিন বা সপ্তাহে। তিনি মনে করছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ ভারতে বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে বহুগুণে (এক্সপোনেনশিয়ালি)। তাই ভারত এক অপ্রত্যাশিত কঠিন সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া এক ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হবে। এখন পর্যন্ত মারাত্মকভাবে আক্রান্ত এলাকাগুলোর মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার মোকাবিলায় সবচেয়ে কম প্রস্তুতি এ অঞ্চলের। এখানকার স্বাস্থ্যসেবা এমনিতেই দুর্বল। এতে রয়েছে কম মাত্রার অর্থায়ন। সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা দুর্ভোগ। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। কারণ, তারা স্বাস্থ্যসেবার দিক দিয়ে বৈশ্বিক সূচকে অনেকটা ভালো করেছে। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ডাটা অনুসারে ভারতে প্রতি ১০০০ মানুষের জন্য হাসপাতালে আছে ০.৫টি বেড। পক্ষান্তরে ইতালিতে আছে ৩.১টি বেড, দক্ষিণ কোরিয়ায় ১২টি বেড।

সর্বশেষ খবর