ব্যাপক প্রাণহানির পর যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে সিরিয়ার দ্রুজ অধ্যুষিত সুইদা শহর থেকে বেশ কিছু বেদুইন বেসামরিক ব্যক্তিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের পাশাপাশি জানিয়েছে আরব দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
দক্ষিণাঞ্চলীয় এই সুইদা প্রদেশে কয়েক শ লোকের প্রাণহানি ঘটানো সহিংসতা সিরিয়ার অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্টের জন্য একটি বড় পরীক্ষা হয়ে হাজির হয়েছে, এতে জড়িত হয়ে গত সপ্তাহে ইসরায়েল সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও সুন্নিদের ওপর বিমান হামলাও চালিয়েছে। এ সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ১৪ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলা দেশটির বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদের ফাটল আরও চওড়া করেছে বলেও মনে হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রবিবার সুইদায় দ্রুজ ও বেদুইন সুন্নিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী শহরটির উপকণ্ঠে মোতায়েন করা হয়। এদিন সিরিয়ার অন্তর্র্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস খাত্তাব জানান, যুদ্ধবিরতি বিবদমান পক্ষগুলোর হাতে আটক জিম্মি ও বন্দিদের মুক্তির সুযোগ করে দেবে। রয়টার্স
গতকাল সকাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক ও বাসে করে নারী, শিশু, আহতসহ কয়েক শ বেদুইন বেসামরিককে সুইদার বাইরে কাছাকাছি আশ্রয়শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে রয়টার্সের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। প্রথম দফায় তিন শর মতো বেদুইনকে সরানো হয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত থাকলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আরও প্রায় সাড়ে পাঁচ শ বেসামরিককে সরানো হবে বলে জানিয়েছেন এ কাজের দায়িত্বে থাকা সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য শোয়েব আজফর। পরবর্তী ধাপে দ্রুজদের হাতে আটক বেদুইন যোদ্ধা ও যুদ্ধে নিহত বেদুইনদের মৃতদেহ সরিয়ে নেওয়া হবে, বলেছেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার বেদুইনকে সুইদা থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।
সুইদায় সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান আহমেদ আল-দালাতিকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সরকারি বাহিনী সুইদা থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়াদের ফেরার কাজেও সহায়তা দেবে। জাতিসংঘের হিসাব মতে, সাম্প্রতিক এ সংঘাতে অন্তত ৯৩ হাজার লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল। ওই বাস্তুচ্যুতদের বেশির ভাগ সুইদার ভিতরেই অন্যত্র আশ্রয় নিলেও অনেকে পশ্চিমের দারা প্রদেশ এমনকি দামেস্কের আশপাশের গ্রামাঞ্চলেও আশ্রয় নিয়েছে।