ভারতের অন্যতম বড় উৎসব দীপাবলির পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আতশবাজির ধোঁয়ায় বাতাস ভরে গেছে। সংবাদ শিরোনামগুলো বলছে, এটি গত চার বছরের মধ্যে দীপাবলি-পরবর্তী সবচেয়ে খারাপ বায়ু গুণমান। এর ফলে শহরটি আবারও বার্ষিক বায়ুদূষণের মুখোমুখি। এ বিষাক্ত বাতাসের জন্য এককভাবে কোনো একটি কারণকে দায়ী করা যাচ্ছে না। এটি আসলে একাধিক ঘটনার সমন্বয়। উৎসবের সময় অতিরিক্ত আতশবাজি ফাটানো, যানবাহনের ধোঁয়া, ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো, শীতকাল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা তাপমাত্রা এবং কম বাতাসের গতি এ দূষণকারী পদার্থগুলোকে মাটির কাছাকাছি আটকে রাখে; যা পরিস্থিতি আরও গুরুতর করে তোলে। এ বছরও এ একই কারণগুলো কার্যকর বলে মনে করা হচ্ছে, তবে দূষণের জন্য কে কতটা দায়ী, তা নিয়ে রয়েছে বিপরীতমুখী প্রতিবেদন। একটি জলবায়ু গবেষণা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, এ বছর বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ায় ফসলের নাড়া পোড়ানোর ঘটনা ৭৭ শতাংশ কমেছে। তারা উৎসবের সময় দিল্লির খারাপ বাতাসের জন্য মূলত আতশবাজিকে দায়ী করেছে।-বিবিসি
তবে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাঞ্জাবের সরকারি তথ্য অন্য কথা বলছে। আঞ্চলিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের মতে গত ১০ দিনে রাজ্যে নাড়া পোড়ানোর ঘটনা ৩ গুণ বেড়েছে। যেখানে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ১১৬ ঘটনার বিপরীতে এখন সাড়ে তিন শর বেশি ঘটনা ঘটেছে। যদিও বিগত বছরগুলোতে সচেতনতামূলক প্রচার এবং বিকল্প যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তবু কৃষকের কাছে নাড়া পোড়ানো এখনো সবচেয়ে সস্তা উপায় হওয়ায় এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। অন্যদিকে দীপাবলির ঠিক আগে ভারতের শীর্ষ আদালত দিল্লি ও আশপাশের অঞ্চলে আতশবাজির পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেন। তারা দুই দিনে ছয় ঘণ্টার জন্য কম দূষণকারী সবুজ আতশবাজি ব্যবহারের অনুমতি দেন। তবে বিশেষজ্ঞরা সমালোচনা করে বলেন যে সবুজ আতশবাজি মাত্র ২০-৩০ শতাংশ কম দূষণকারী। বাস্তবেও এ নিষেধাজ্ঞা খোলাখুলিভাবে লঙ্ঘিত হয় এবং নিষিদ্ধ আতশবাজিও অবাধে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ দূষিত বাতাস সেবন করে দিল্লির বাসিন্দারা কাশি, চোখ জ্বালা এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভুগছে। চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন যে দীর্ঘমেয়াদি এক্সপোজার শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা দুর্বল করে দেয় এবং গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।