১২ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:৫৫

ভারতে হু হু করে বাড়ছে করোনা, একাধিক মন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ভারতে হু হু করে বাড়ছে করোনা, একাধিক মন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত

ভারতে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড-১৯ সংক্রমিতের সংখ্যা। বুধবার পর্যন্ত গত চব্বিশ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭২০ জন, যা মঙ্গলবারের তুলনায় দৈনিক আক্রান্ত ২৬ হাজারের বেশি (১৫.৮ শতাংশ)। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার ৫১০ জন। গত চব্বিশ ঘণ্টায় মৃত ৪৪২ জন, সবমিলিয়ে এপর্যন্ত মৃত্যু ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৫ জন।

ভারতে চব্বিশ ঘণ্টায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে সংক্রমিত হয়েছে ৪ শতাধিকের বেশি, সবমিলিয়ে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৬৮ জনে। তবে আশার কথা এটাই যে গত একদিনে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও নেহাত কম নয়, ৬০ হাজার ৪০৫ জন। এদিকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সোমবার থেকেই দেশে চালু হয়েছে বুস্টার ডোজ প্রদান। প্রথম স্টেজে করোনা যোদ্ধা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। 

এদিকে একের পর এক শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। চলতি সপ্তাহেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এবার আক্রান্ত কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়করি। এই ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই’এর শরীরেও। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জয়প্রকাশ নাড্ডা, দলের সহ সভাপতি রাধামোহন সিং, দিল্লি বিধানসভার স্পীকার ও আপ নেতা রাম নিবাস গোয়েলও করোনায় আক্রান্ত। 

পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনের আর একমাস বাকি, তার আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পাঞ্জাব লোক কংগ্রেসের প্রধান নেতা ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। একের পর এক শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনায় আক্রান্তদের ফোন করে তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নেন মোদি। 

দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরেও করোনার হানা দিয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ জন দলীয় কর্মী। সকলকেই হোম আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। একসাথে এত সংখ্যক কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলার পরই গোটা কার্যালয় স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। 

ভারতের করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ২৪ জন, মৃত্যু ২২। রাজধানী দিল্লিতে গত চব্বিশ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২১ হাজারের বেশি। দক্ষিণ ভারতের রাজ্য তামিলনাড়ুতে নতুন করে ১৫ হাজার ৩৭৯ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু ২০ জনের। 

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে একদিনে আক্রান্ত ২১ হাজার ৯৮ এবং মৃত্যু ১৯। রাজ্যটিতে পজিটিভিটি রেট ৩২.৩৫ শতাংশ। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গোটা রাজ্য জুড়েই একাধিক বিধিনিষেধ চালু রয়েছে। এর পাশাপাশি কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ছোট-বড় বাজারগুলোতে কঠোরভাবে কোভিড বিধি মানার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির স্থানীয় প্রশাসন। 

এরই মধ্যে আশঙ্কার খবর দিয়েছেন ভারতের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট এন্ড এপিডেমিওলজিস্টেও সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইসারি কমিটির চেয়ারম্যান ডা. জয়প্রকাশ মুলীয়ীল। তার অভিমত ‘করোনার ওমক্রিন ভ্যারিয়েন্ট প্রায় অদমনীয়। সকলেই এই নতুন ধরনে আক্রান্ত হবেন। বুস্টার ভ্যাকসিনও এই সংক্রমণ আটকাতে পারবে না। কারণ গোটা বিশ্বজুড়েই তাই হচ্ছে, সেখানেও বুস্টার ডোজ এই সংক্রমণ রুখতে ব্যর্থ।’

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর