২৮ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে পৌরসভা নির্বাচন। প্রথম ধাপে ২৫টি পৌরসভায় এ নির্বাচন হবে। দ্বিতীয়বারের মতো পৌরসভায় দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী হতে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদাধিকারী বা তাদের নিকট থেকে ক্ষমতাপ্রার্থী ব্যক্তি স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র লাগবে। তবে কোন দল কোন পৌরসভায় মেয়র পদে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবে না, একাধিক প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় দলের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হবে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার ১০০ জন ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। তালিকায় নির্ধারিত সংখ্যার কম ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে বা কোনো ক্রমিকে তথ্যের গরমিল থাকে তাহলে রিটার্নিং অফিসার মনোনয়নপত্র বাতিল করবেন। তবে কোনো স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী পৌরসভার মেয়র পদে ইতিপূর্বে নির্বাচিত হয়ে থাকলে তার জন্য ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা দাখিল করতে হবে না। এদিকে প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র দাখিলে আগেই তফসিলি ব্যাংকে একটি নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। যার নম্বর, ব্যাংক ও শাখার নাম মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করতে হবে। নির্বাচনের সব ব্যয় এই অ্যাকাউন্ট থেকেই করতে হবে। আর নির্বাচনের পরে নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্নের সঙ্গে এই অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে। এ ছাড়া মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রে ১২ ডিজিটের টিআইএন নম্বর উল্লেখ করতে হবে এবং সর্বশেষ জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। গত ২২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ২৫টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। এ ধাপে সব পৌরসভায় ভোট হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই ৩ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১০ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১১ ডিসেম্বর। এরপরই শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার বা ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার সিডি ক্রয় করতে হবে। প্রতি ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার সিডির মূল্য ৫০০ টাকা হবে।
মেয়র পদের জামানত ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা : মেয়র পদে নির্বাচনের ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার ভোটার সংবলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ১৫ (পনের) হাজার টাকা, ২৫ (পঁচিশ) হাজার এক হতে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার ভোটার সংবলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ২০ (বিশ) হাজার টাকা, ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার এক হতে ০১ (এক) লক্ষ ভোটার সংবলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা এবং ০১ (এক) লক্ষ এক ও তদূর্ধ্ব ভোটার সংবলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা জমাদানের প্রমাণস্বরূপ ট্রেজারি চালান বা কোনো তফসিলি ব্যাংকের পে-অর্ডার বা পোস্টাল অর্ডার জমা দিতে হবে। আর কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে হলে পাঁচ হাজার টাকা জমাদানের প্রমাণস্বরূপ ট্রেজারি চালান বা কোনো তফসিলি ব্যাংকের পে-অর্ডার বা পোস্টাল অর্ডার জমা দিতে হবে।প্রার্থীকে দিতে হবে হলফনামা : মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ফরমে হলফনামা দাখিল করতে হবে। এতে সাতটি তথ্য দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- তার (প্রার্থীর) সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি; বর্তমানে তিনি কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আছেন কিনা; তার বিরুদ্ধে অতীতে দায়েরকৃত কোনো ফৌজদারি মামলার রেকর্ড আছে কিনা, থাকলে সেটির রায় কী ছিল; তার ব্যবসা বা পেশার বিবরণী; তার আয়ের উৎস; তার নিজের ও অন্যান্য নির্ভরশীলদের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী এবং কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে একক বা যৌথ বা তার ওপর নির্ভরশীল সদস্য কর্তৃক গৃহীত ঋণের পরিমাণ অথবা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা পরিচালক হওয়ার সুবাদে ওই প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত ঋণের পরিমাণ।
প্রস্তাবক ও সমর্থক : কোনো ভোটার প্রস্তাবকারী হিসেবে অথবা সমর্থনকারী হিসেবে মেয়র অথবা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর বা সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীর একটির অধিক মনোনয়নপত্রে তার নাম ব্যবহার করবেন না। যদি কোনো ভোটার একই পদে একাধিক মনোনয়নপত্রে তার নাম ব্যবহার করেন, তা হলে এইরূপ সব মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।