বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু ও করোনা

♦ দুই দিনের ব্যবধানে দ্বিগুণ করোনা শনাক্ত ♦ হাসপাতালে ভিড় ডেঙ্গু আক্রান্তের

জয়শ্রী ভাদুড়ী

লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু ও করোনা

দেশে কভিড-১৯ ও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু ও করোনা সংক্রমণ। চলতি মাসের ১৩ দিনে ডেঙ্গুজ্বরে মারা গেছেন ১৮ জন। করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ১৩ শতাংশে। দুই দিনের ব্যবধানে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে দ্বিগুণ হারে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ক পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা    যায়। গতকাল ডেঙ্গু জ্বরে দুজন মারা গেছেন। এ সময়ে হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৫৩ জন। এ নিয়ে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রোগী আছেন ১ হাজার ২১৩ জন। গত সোমবার ডেঙ্গুতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৪৫ জন। গতকাল সারা দেশে নতুন করে আরও ৩৫৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ২৩৮ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকার বাইরে চিকিৎসাধীন ১১৫ জন। এ নিয়ে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ১ হাজার ২১৩ জন ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪৭টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮৯৫ জন। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩১৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছরে ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৯ হাজার ৪৪৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮ হাজার ১৯৬ জন। এ সময় ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭ হাজার ৫৩৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ হাজার ৬২৫ জন। ঢাকার বাইরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৯১১ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৫৭১ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বছরের প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় গত ২১ জুন। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর দেশব্যাপী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। দেশে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে করোনা শনাক্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে সংক্রমণের হারও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে নতুন করে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছেন ৪৩৫ জন। যা সংক্রমণ শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ৪ হাজার ১১১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নতুন ও পুরনো মিলে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪ হাজার ১২২টি। এসব নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছেন ৪৩৫ জন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হলো ২০ লাখ ১৫ হাজার ৭৪৩ জনের শরীরে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে মোট সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ।

আগের দিনও শনাক্তের হার একই ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৩০ জন। যা আগের দিন ছিল ২৯১ জন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সুস্থতার সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। এই সংখ্যা নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত হলেন ১৯ লাখ ৫৯ হাজার ২৬৭ জন। সংক্রমণ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ২০ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ৯৭ দশমিক ২১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশে স্থির রয়েছে। করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১৮ হাজার ৭২৫ জন পুরুষ, ১০ হাজার ৬১০ জন নারী। শতকরা হিসেবে পুরুষের মৃত্যু হার ৬৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, নারী মৃত্যুর হার ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮৮১টি পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৬১টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব ৬৬৩টি। এসব ল্যাবে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩ হাজার ৫৩৭টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯৮টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

জ্বর এলে ডেঙ্গু-করোনা টেস্ট করতে হবে

দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক

 

সর্বশেষ খবর