কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকার সি আলিফ হোটেলে আট মাসের মেয়েকে বালতির পানিতে ফেলে ও স্ত্রী সুমা দে-কে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন জেবিন দে ওরফে দুলাল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুলাল এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর নতুন ব্রিজ থেকে তাকে আটক করা হয়। গতকাল সকালে তাকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আটকের পর দুলাল ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিচ্ছিলেন। দুলালের বাড়ি বাঁশখালীর বৈলগাঁও এলাকায়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুলাল আট মাসের সন্তানকে বালতির পানিতে চুবিয়ে ও স্ত্রীকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন বলে স্বীকার করেছেন। ঠিক কী কারণে তাদের হত্যা করা হয়েছে তা স্পষ্ট করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় জেবিনের পাশাপাশি তার বাকি দুই সন্তানকেও হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নিহত সুমা দে ও শিশুকন্যার লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। নিহতের স্বজনরা কক্সবাজার এসে পৌঁছালে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
কক্সবাজার মডেল থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হোটেল সি আলিফের চারতলার ১১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেওয়ার সময় হোটেল রেজিস্ট্রারে নিজের নাম লুকিয়ে সাগর দে এন্ট্রি করেন দুলাল। এরপর দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে হোটেলে ওঠেন। হোটেলে স্ত্রীর নাম লেখান সুমা দে। এরপর কোনো এক সময় স্ত্রী ও মেয়েকে খুনের পর দুই ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে হোটেলের ওই কক্ষে মা ও মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যার দিকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। ১৪ ফেব্রুয়ারি হোটেলে ওঠার পর থেকে পরিবারটিকে কক্সবাজার শহরে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
কক্সবাজারে নারী খুনের অভিযোগে গ্রেফতার চট্টগ্রামে : কক্সবাজারে হোটেলে এক নারীকে খুনের অভিযোগে চট্টগ্রাম থেকে মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চৌধুরীহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মোস্তাফিজুর বাগেরহাট জেলা সদরের আবদুল জব্বারের ছেলে। র্যাব-৭ সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের হোটেল ‘সি বার্ড’-এ এক নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে রুম ভাড়া নেন মোস্তাফিজ। পরে হোটেল কক্ষে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই নারীকে হত্যা করে হাটহাজারীতে পালিয়ে যান। প্রযুক্তির সহায়তা তাকে গ্রেফতার করা হয়। নিহত ওই নারীর সঙ্গে তার পরকীয়া ছিল। তবে তার বিষয়ে বিস্তারিত জানেন না মোস্তাফিজ। পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে অজ্ঞাত হিসেবে ওই নারীকে দাফন করা হয়।