ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউনিয়নে ঝিকটিপোতা গ্রাম। এখানে দীর্ঘদিন ধরে বাদুড় বসবাস করায় গ্রামের নাম হয়েছে বাদুড়তলা ঝিকটিপোতা গ্রাম। এখানে শুনসান পরিবেশে কবরস্থানের মধ্যে একটি প্রাচীন বটগাছের মগডালগুলো হাজার হাজার বাদুড়ের অভয়ারণ্য। মজার ব্যাপার হলো, এই বাদুড়ের দল দিনভর বাংলাদেশের এই বটগাছে ঘুমায়, আর রাত কাটায় প্রতিবেশী দেশ ভারতে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা হলেই এরা খাবারের সন্ধানে চলে যায় ভারতে। আবার ভোর হলেই ঘুমানোর জন্য ফিরে আসে বাংলাদেশে। এক কিলোমটিার দূরে তারকাঁটা পার হলেই এরা পৌঁছে যায় ভারতে। এই বাদুড় নিয়ে গ্রামবাসী বেশ আনন্দিত। গ্রামের ইদ্রিস আলী ও স্থানীয় মুদি দোকানদার নাজমুল ইসলামসহ অনেকে জানান, এরা নিরীহ প্রাণী। মাঝেমধ্যে কিছুক্ষণ কিচিরমিচির শব্দ করে। পোষা প্রাণীদের মতোই এরা এখানে নির্ভয়ে বসবাস করছে বহুকাল ধরে। বাদুড় নিয়ে কল্পকাহিনি আর কুসংস্কারের যুগ কেটে গেছে। এরা মানুষের উপকারই করে। আবার কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলকে রক্ষা করে। ফুল-ফলের পরাগায়ণ সৃষ্টি করে। মানবকল্যাণকারী ও পরিবেশবান্ধব এ স্তন্যপায়ী প্রাণীটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। তাই জীববৈচিত্র্য ও অতি প্রয়োজনীয় এই প্রাণীটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা সামাজিক বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, বাদুড় পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এদের সুরক্ষা দেওয়াসহ গ্রামবাসীকে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করি, আগামী দিনগুলোতেও এরা আরও স্বাধীনভাবে থাকতে পারবে।