সুন্দরবনে মৎস্য প্রজনন মৌসুমে চোরাই পথে মাছ আহরণ ও অবৈধভাবে শুঁটকি তৈরি করতে গিয়ে বনদস্যু বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছেন নৌকাসহ ১০ জেলে। অপহৃতদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করেছে দস্যু করিম-শরিফ বাহিনী। সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক থেকে শনিবার বিকালে নৌকা ও শুঁটকিসহ চৌরাই পথে বনে প্রবেশকারী জেলেদের অপহরণ করে সশস্ত্র দস্যু গ্রুপটি। সুন্দরবনের জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে দস্যু গ্রুপকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে লোকালয়ে ফিরেছেন মোংলার বকুলতলা গ্রামের জেলে অবজাল (৩২)। তিনি অবৈধভাবে বনে প্রবেশ ও মাছ শিকার করতে বনে দস্যুদের হাতে নয় দিন বন্দি থাকার পর গত শুক্রবার বিকালে মুক্তি পান। এদিকে, বনবিভাগের স্মার্ট টহল টিমের সদস্যরা চাঁদপাই রেঞ্জের চরাপুটিয়া-সংলগ্ন বড় ডাবুর খালের মুখ থেকে অভিযান চালিয়ে ১৮ বস্তা চিংড়ি শুঁটকিসহ (প্রতি বস্তায় ২৫ কেজি) দুটি নৌকা জব্দ করে। সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা রামপালের শ্রীফলতলা গ্রামের জেলে আলম বলেন, তার সহযোগীরা মুক্তিপণের দাবিতে দস্যু গ্রুপটির হাতে জিম্মি রয়েছে। তিনি আরও জানান, কয়রা উপজেলার রাসেল (৩৫) নামে এক জেলে রয়েছে অপহৃতদের মধ্যে। এদিকে শনিবার দুপুর ২টায় বনবিভাগের স্মার্ট টহল টিমের সদস্যরা চাঁদপাই রেঞ্জের চরাপুটিয়া-সংলগ্ন বড় ডাবুর খালের মুখ থেকে অভিযান চালিয়ে ১৮ বস্তা চিংড়ি শুঁটকিসহ (প্রতি বস্তায় ২৫ কেজি) দুটি নৌকা জব্দ করে। বনের অভয়ারণ্যের খালে বিষ প্রয়োগ করে এ মাছ আহরণসহ বনের কাঠ পুড়িয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয় বলে জানা গেছে। জব্দ শুঁটকির আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা।
এ বিষয় সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের হাড়বাড়িয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তাকীন বিল্লাহ বলেন, নৌকাসহ শুঁটকি জব্দের ঘটনায় বন আইনে মামলা হয়েছে। রবিবার সকালে জব্দ শুঁটকি আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সেখানে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করার কথা রয়েছে।