শিশুদের ভবিষ্যতের সুনাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবনে সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে শিক্ষা। এ সম্পদ কেউ কেড়ে নিতে পারে না, এ সম্পদ ছিনতাই করা যায় না। এ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে শিশুদের কাজ করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু কিশোর দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় শিশু কিশোর সমাবেশে তিনি একথা বলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে বলেই আজ বাংলাদেশ ধীরে ধীরে অভিশাপমুক্ত হয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের (স্বাধীনতাবিরোধী) ষড়যন্ত্র চলছে, কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র এখন মানুষকে আর বিভ্রান্ত করতে পারছে না।”
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে স্বাধীনতার চেতনা থেকে ‘সম্পূর্ণ ভিন্ন’ দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। যে ঘাতকের দল বা ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে (বঙ্গবন্ধু) আমাদের মাঝ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে– সেই খুনীদের বিচার আমরা করেছি। তাদের রায়ও কার্যকর হয়েছে। বাঙালি জাতি অভিশাপমুক্ত হয়েছে।”
স্বাধীনতার পরও সেই ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একুশ বছর এদেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল বিজয়ের ইতিহাস জানা থেকে। আমাদের যে গর্ব করার মতো কিছু ছিল- সেটুকু তারা জানতে পারেনি। তাদের সবকিছু যেন গুলিয়ে দেওয়া যায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করা… সেই চেষ্টাই করা হয়েছিল।”
শেখ হাসিনা বলেন, তার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে; বর্তমান প্রজন্ম ‘প্রকৃত ইতিহাস’ জানতে পারছে। আমরা এটাই চাই, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সংগ্রামের ইতিহাস ছেলেমেয়েরা জানবে। জেনে তাদের মন মানসিকতা সেইভাবে তৈরি হবে যে এই জাতি বিজয়ী জাতি, বঙ্গবন্ধু আমাদের হাতে বিজয়ের সেই পতাকা তুলে দিয়ে গেছেন।”
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে ধাপে ধাপে এ জাতিকে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। এই কাজ করতে গিয়ে জীবনে অনেক বছর তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন, বারবার মৃত্যুর মুখে দাঁড়াতে হয়েছে তাকে। তিনি ছিলেন অদম্য সাহসী, নীতি ও লক্ষ্যে স্থির থেকে এগিয়ে গেছেন।”
দাদীর কাছে শোনা বাবার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ছোটবেলা থেকেই মানুষকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন বঙ্গবন্ধু। বালক বয়স থেকেই তিনি মানুষের উপকারে বিভিন্ন কাজ করতেন। নিজের জামা, খাবার ও অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিস অভাবী মানুষকে বিলিয়ে দিতেন। দুর্ভিক্ষের সময় বঙ্গবন্ধু তার বাবার গোলা থেকে ধান বিলিয়ে দিয়েছিলেন বলেও জানান তার কন্যা শেখ হাসিনা।
শিশু সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি অংশে প্রধানমন্ত্রী সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা এবং ৭ই মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে রাফিয়া তুর জামান নামের এক শিশু।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ মার্চ, ২০১৬/মাহবুব