নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই করোনা সংক্রান্ত জাল সনদ প্রদানসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতাল। এদিকে হাসপাতালের মালিক মো. শাহেদ সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে র্যাব।
গতকাল থেকেই ফেসবুকে অনেকে মো. শাহেদের বহু ছবি শেয়ার করেছে যেখানে তাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে দেখা গেছে। এমনকি বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতার সাথে তার ছবি ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-এর মুখপাত্র সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, বাংলাদেশের হর্তা-কর্তা ব্যক্তিদের সাথে সে ছবি তুলেছে। এটা আসলে তার একটা মানসিক অসুস্থতা। এই ছবি তোলাকে কেন্দ্র করেই সে প্রতারণা করতো।মো. শাহেদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হলে র্যাব মুখপাত্র বলেন, প্রতারকদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তারা যখন যার নাম পারে তখন সেটা বেচে নিজের জীবনকে অগ্রগামী করার চেষ্টা করে।
র্যাব কর্মকর্তা কাশেম বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. শাহেদ বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারণাই ছিল তার প্রধান ব্যবসা।
এমএলএম কোম্পানির মাধ্যমে মানুষের সাথে আর্থিক প্রতারণার জন্য এর আগে এই ব্যক্তি কারাগারেও গিয়েছিল বলে তথ্য দিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায়, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করার জন্য গতরাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে ভুয়া পরীক্ষা এবং নানা অপকর্মের মাধ্যমে শাহেদ কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা কাশেম জানান, গত তিনমাসে সে আমাদের হিসাব মতে প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা সে অবৈধভাবে মানুষের কাছ থেকে অপকর্মের মাধ্যমে নিয়েছে।
র্যাব-এর তথ্য অনুযায়ী করোনাভাইরাস টেস্ট করারা জন্য রিজেন্ট হাসপাতাল প্রায় ১০ হাজার মানুষের নমুনা সংগ্রহ করেছে। কিন্তু সেগুলো পরীক্ষা না করেই রোগীদের ভুয়া ফলাফল দেয়া হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, ৪৫০০ ভুয়া টেস্টের কাগজপত্র তাদের হাতে এসেছে।
র্যাব বলছে, টেস্টের ভুয়া ফলাফল তৈরি করা হয়েছে রিজেন্ট হাসপাতালের কম্পিউটার সিস্টেমে। প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার অপারেটরদের দ্বারা ভুয়া ফলাফল তৈরি করতে বাধ্য করেছে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান।
রিজেন্ট হাসপাতাল ও গ্রুপের মালিক ও এমডি সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং এর মধ্যে আট জনকে আটক করা হয়েছে।
মো. শাহেদকে আটক করার জন্য অভিযান চলছে বলে জানায় র্যাব। এদিকে আজ ওই হাসপাতালের সাত কর্মকর্তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন