পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সরকারি উন্নত মানের খাবার খেয়ে বাগেরহাট জেলা কারাগারের অর্ধশত বন্দী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে গতকাল দুপুরে সদর হাসপাতালে ১৯ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার খবর পেয়ে ডিআইজি (প্রিজন) একেএম ফজলুল হক যশোর থেকে বাগেরহাটে আসেন। এদিকে, বন্দীদের অসুস্থ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের স্বজনরা হাসপাতাল ও কারাগারের সামনে ভিড় করছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলা প্রশাসন বা কারা কর্তৃপক্ষ কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বন্দীরা হলেন, জালাল হোসেন, হেদায়েত, মনির হাওলাদার, এমদাদুল, নজরুল হাওলাদার, হীরামণি, মাহাতাব খান, মুক্তামীর, জাহিদুল, মিন্টু, মিজান, হেমায়েত হোসেন, মজিবর ফরাজী, আব্বাস শেখ, গোপাল চন্দ্র পাইক, ইমাদুল, আবুবক্কর, কামাল ও রাসেল। অসুস্থ কয়েকজন বন্দী জানান, সোমবার রাতে গরুর মাংস ও পোলাও খেয়ে পেটের ব্যথা এবং এরপর বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এতে প্রায় অধিকাংশ বন্দী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
কারারক্ষীদের জানানো হলেও রাতে জেলার বা সুপার কেউ তাদের দেখতে আসেননি।
বাগেরহাট জেলা কারাগারের সুপার আমানুল্লাহ জানান, নববর্ষ উপলক্ষে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। সোমবার সকালে পান্তা ইলিশ, দুপুরে আলুর দম এবং রাতে ৫২৯ জন বন্দীকে রান্না করা গরুর মাংস ও পোলাও পরিবেশন করা হয়। রাতের খাবারের পর কিছু বন্দীর পেটের পীড়া ও ডায়রিয়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। গতকাল সকালে গুরুতর ১৯ বন্দীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কারা অভ্যন্তরে অসুস্থ বন্দীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কুহেলী বেগম জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ার ফলেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জেল সুপার খাদ্যে বিষক্রিয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, তাদের নিজস্ব গভীর নলকূপের পানি খুব লবণাক্ত, সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। ফলে লবণাক্ত পানি পান করার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. বাকির হোসেন জানান, অসুস্থদের উন্নত চিকিৎসা দিতে দুটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। একটি মেডিকেল টিম সদর হাসপাতালে ও অন্যটি কারা অভ্যন্তরে অসুস্থদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।